৪.৫ লাভবিশেষঃ (লাভ বিশেষ)

চতুর্থ ভাগ – পঞ্চম অধ্যায়

বেশ্যা ত্রিবিধ;–একপরিগ্রহা, অনেকপরিগ্রহা ও অপরিগ্রহা। তার মধ্যে একপরিগ্রহা লাভের কথা কথিত হইয়াছে। অনেকপরিগ্রহা লাভের কথা পরে বলা যাইবে। এখন অপরিগ্রহার পরিগ্রহ ব্যতীতও অনেকের নিকট হইতে লাভ হইতে পারে; সুতরাং তাহারই লাভ বিশেষ বলা যাইতেছে। অতএব এ প্রকরণ লাভবিশেষ নামেই বিদিত হইবে।।

অপরিগ্রহের কারণ নির্দেশ করা যাইতেছে—
গমনীয় নায়কের বাহুল্য ঘটিলে যদি নায়িকা বহুপরিমাণে প্রতিদিন লাভ করতে পারে, তবে কোনও একজনকে পরিগ্রহ করিয়া বসিয়া থাকিবে না।।’১।।

দেশ সম্পন্ন কিনা, কাল উদ্ভূতশক্তিক কিনা, দেশপ্রবৃত্তি বিপরীত কিনা, নিজের গুণ, রূপ ও বৈদগ্ধ্যাদি সৎ কি অসৎ, এবং সৌভাগ্য অন্য বেশ্যা হইতে ন্যূন কি অতিরিক্ত দেখিয়া বিবেচনানুসারে তদনুরূপ অর্থ স্থাপন করিবে।।’২।।

গম্যের নিকট দূতদিগকে প্রযোজিত করিবে। আর যাহারা গম্যের সহিত কোনও সম্বন্ধে সম্বন্ধ, অথচ নিজের আত্মীয় ও অভিপ্রায়জ্ঞানবান্‌, তাহাদিগকে নিজেই পাঠাইবে।।’৩।।

দুই, তিন, চারিদিন পর্যন্ত একজনের নিকট অধিকমাত্রায় লাভ করিবার জন্য গমন করিবে (সম্প্রয়োগ করিবে), এবং সেই সেই দিনের জন্য পরিগ্রহও আচরণ (অন্যকে আর অপেক্ষা না করিয়া) করিবে।।’৪।।

আচার্যগন বলিয়া থাকেন—যদি বহুগমনীয় নায়ক একই সময়ে উপস্থিত হয় ও কেহ বা সুবর্ণ, অন্য কেহ বা তত্তুল্য মূল্য দিতে প্রস্তুত থাকে; নায়িকা যে দ্রব্যের লাভে সন্তুষ্ট হইবে, সেই দ্রব্যের দাতার নিকট লাভবিশেষ প্রত্যক্ষ করিবে।।’৫।।

আচার্য বাৎস্যায়ন বলেন—যখন একই কালে সমস্ত কার্যের জন্য প্রস্তুত হইতে পারা যায়, তখন একই কার্যের জন্য ত প্রস্তুত নিশ্চয় হইতে হইবে। তার মধ্যে যখন সুবর্ণমূল্যের অনুরূপ দ্রব্যও কার্যমূল, তখন প্রথমকল্পীয় সুবর্ণদানকারীর অঙ্কে শয়নই যুক্তিসিদ্ধ।।’৬।।

সুবর্ণ, রজত, তাম্র, কাংস্য, লৌহ, ও তম্নির্মিত ভাণ্ডোপকরণ, আস্তরণ (গাল্‌চে, চুল্‌চে ইত্যাদি), প্রাবরণ (শাল, জামিয়ার, রুমাল, চাদর ইত্যাদি), বস্ত্রবিশেষ (কৌষেয়, কার্পাসীয়, লোমীয়, ইত্যাদি), গন্ধদ্রব্য (চন্দন, অগুরু, গোলাপ, আতর, মতিয়া প্রভৃতি), কটুক (মরীচাদি), ভাণ্ড (ঘটিঘটাদি), ঘৃত, তৈল, ধান্য ও পশুজাতি, ইহার মধ্যে পূর্ব পূর্ব দ্রব্যই বিশেষ। ইহার মধ্যে একাধিক দ্রব্য উপস্থিত হইলে, তুলনা করিয়া যেটি প্রবল হইবে, তাহাই গ্রহণ করিবে। সমান হইলে মিত্রের বাক্য যে পক্ষে, বা উভয়ত্র উভয়মিত্রের অনুরোধ থাকিলে, যাহার নিকট আবার পাইবার আশা করা যাইতে পারে, তাহার পক্ষের, কিংবা উভয়ত্রই সে আশা থাকিলে, যাহার গ্রহণে নিজের কিছু প্রভাব হইবার সম্ভব বুঝিবে, অথবা উভয়ত্রই প্রভাব লাভের সম্ভবনা থাকিলে, গম্যের গুণ যে পক্ষের অধিক বুঝিবে, সেই পক্ষের, তদ্বারা উভয়ত্রই যদি গুণসম্ভাবনা থাকে, তবে যাহার উপর নায়িকার প্রীতি অধিক হইবে, সেই পক্ষেরই মূল্যগ্রহণ করিয়া কার্যে ব্যবস্থিত হইবে।।’৭।।

আচার্যগণ বলেন—অনুরাগী ও ত্যাগীর মধ্যে দানশীলই বিশেষ প্রত্যক্ষ।।’৮।।

অনুরাগবান বা দানশীল না হইলেও যদি অনুরক্ত হয়, তবে দান করিবে পারে; কিন্তু দানশীল সর্বদাই ধন দান করিয়া থাকে। অতএব দানশীলই শ্রেষ্ঠ।।’৯।।

অনুরক্ত ব্যক্তি ধনগৃধ্নু হইলেও অনুরাগবশে ধন দান করে; কিন্তু ত্যাগীকে প্রয়াস স্বীকার করিয়াও অনুরক্ত করিতেই পারা যায় না, দুরাস্তাং তজ্জন্য দানপ্রত্যাশা; সুতরাং অনুরক্ত পুরুষই শ্রেষ্ঠ—ইহা বাৎস্যায়ন বলেন।।’১০।।

তন্মধ্যে আবার ধনবান্‌ ও নির্ধনের মধ্যে ধনবান্‌ বিশেষ, ত্যাগী ও নায়িকার প্রয়োজনকর্তার মধ্যে প্রয়োজনকর্তাই বিশেষ প্রত্যক্ষীকৃত। ইহা আচার্যগণ বলেন।।’১১।।

বাৎস্যায়ন বলেন—নায়িকার প্রয়োজনকর্তা একবারমাত্র কার্য সম্পাদন করিয়া আপনাকে কৃতী বলিয়া মনে করে; কিন্তু ত্যাগী পূর্বে যাহা দিয়াছে, তাহার অপেক্ষা আর কিছুই মনে করে না, সে স্বভাবতই যখন-তখন দান করে, কারণ দান করাই তাহার স্বভাব।।’১২।।

তাহার মধ্যেও আবার যখন নায়িকার প্রয়োজন আসিয়া উপস্থিত হইবে, তখন তাহার পূরণকৃত বিশেষ দেখিতে হইবে। আচার্যগণ আরও বলেন—কৃতজ্ঞ ও ত্যাগীর মধ্যে ত্যাগীর নিকট কিছু বিশেষত্ব দেখিতে পাওয়া যায়; কিন্তু কৃতজ্ঞে তাহা দেখিতে পাওয়া যায় না।।’১৩।।

আচার্য বাৎস্যায়ন বলেন—ত্যাগী পুরুষ বহুকাল ধরিয়া আরাধিত হইলেও একটি অপরাধ দেখিয়া বা ক্ষুদ্রগণিকার দোষে মিথ্যাদোষ গ্রাহিত হইলে সর্বদা সেই অপরাধ ধরিয়া বসিয়া থাকে; কিন্তু অতীত আরাধনক্লেশের কিছু অপেক্ষা রাখে না। আর ত্যাগিগণ প্রায়শ তেজস্বী, সরলস্বভাব এবং অনাদরপরায়ণ হইয়া থাকে; সুতরাং তেজস্বীদোষে সামান্য অপরাধও সহ্য করে না! সরলস্বভাব বলিয়া মিথ্যাদোষ গ্রহণ করিয়া বসিয়া থাকে, এবং অনাদরপরায়ণ বলিয়া পরিশ্রমের অপেক্ষা রাখে না; সুতরাং ত্যাগীর নিকট সর্বদা আদর পাইবার সম্ভাবনা নাই। কৃতজ্ঞ পুরুষ কিন্তু কৃতপূর্ব পরিশ্রমের অপেক্ষা ছাড়িতে পারে না বা সহসা বিরক্ত হইতেও পারে না! আরও কৃতজ্ঞ পুরুষ দোষগুণের পরীক্ষণস্বভাব হইয়া থাকে। অতএব মিথ্যাদোষ উপস্থাপিত হইলেও পরীক্ষা করিয়া তবে সে দোষ গ্রহণ করে। অপরীক্ষিত দোষগ্রহণ কখনই করে না; সুতরাং ত্যাগী ও কৃতজ্ঞের মধ্যে কৃতজ্ঞ পুরুষই শ্রেষ্ঠ বলিতে হইবে।।’১৪।।

তাহার মধ্যে আয়তির (গৌরব লাভের) সম্ভাবনা সেখানে, সেই পুরুষেরই বিশেষত্ব জানিবে।।’১৫।।
কৃতজ্ঞদ্বয়ের সন্নিপাতে আয়তি লইয়া বিচার করিতে হইবে।।
১৫।।

আচার্যগণ বলেন—মিত্রের বাক্য ও অর্থাগম, এই উভয়ের সন্নিপাতে যথার্থ অর্থাগম হইবার সম্ভব, সেই স্থানেই কিছু বিশেষত্ব আছে স্বীকার করিতে হইবে।।’১৬।।

বাৎস্যায়ন বলেন—সেটি ঠিক নহে; কারণ, অর্থাগম পরেও হইতে পারে; কিন্তু মিত্রবাক্য একবারমাত্র উপেক্ষা করিলে, মিত্র ত তখনই অসন্তুষ্ট হইয়া উপেক্ষা করিতে পারে; সুতরাং মিত্রবাক্য ও অর্থাগমের সন্নিপাতে মিত্রবাক্য উপেক্ষা করা যুক্তিসঙ্গত নহে।।’১৭।।

তাহার মধ্যেও দেখিবে যে, তখন অর্থ উপেক্ষিত হইলেও পরে আবার সে অর্থ আসিবে—যদি এরূপ হয়, তবে কথঞ্চিত বিশেষ।।’১৮।।

তাহাতে মিত্র কলুষিত হইতে পারে না; কারণ, সেখানে পরে আর অর্থাগমের সম্ভাবনা নাই। এখন যে চলিয়া গেল, সে আর তাহার নিকট কখনই আসিবে না ও তত ধনও দিবে না, এইরূপ ভাবিয়া মিত্রের কথা রক্ষা না করিয়াও ত সে ধন তাহাকে লইতে হইবে। এই জন্য বলিতেছেন—

সেরূপস্থলে মিত্রকে একটি মহৎ কার্য সন্দর্শন করাইয়া বলিবে, আজ ক্ষমা করুন, আমার এই কার্যটি শেষ হইয়া যাক; কাল আপনার কথা আমি নিশ্চয় রক্ষা করিব। এইরূপ বলিয়া অনুনয় করিয়া মিত্রকে সম্মত করিবে ও যে অর্থের অভিপাত হইবে বলিয়া বুঝিবে, তাহার প্রতিগ্রহ করিবে।।’১৯।।

আচার্যগণ বলেন, অর্থাগম ও অনর্থপ্রতিঘাতের মধ্যে অর্থাগমের বিশেষত্ব প্রতীত বিষয়।।’২০।।

আচার্য বাৎস্যায়ন বলেন—অর্থের পরিমান নিতান্ত অল্প; কিন্তু অনর্থের পরিমান করিতে পারা যায় না। তারপর অনর্থ যদি একবার প্রবৃত্ত হন, তবে জানিতে পারা যায় না, কোথায় কিরূপে কিভাবে আছে ও কিরূপে কিভাবে আবারও উপস্থিত হইবে। হয়ত সমূলনাশ করিবার জন্যও অনর্থ উপস্থিত হইতে পারে; সুতরাং অর্থাগম অপেক্ষা অনর্থপ্রতীকারই শ্রেষ্ঠ।।’২১।।

তাহার মধ্যে আবার গুরুলাঘবকৃত আছে।।’২২।।
অর্থাৎ ইহা যদি নিশ্চয় হয় যে, অনর্থটি গুরু নহে; কিন্তু অর্থটিই গুরু; তবে অর্থাগমে বাধা দেওয়া উচিত নহে; কিন্তু যদি বুঝিতে পারা যায় যে, অর্থ লঘু—অনর্থ গুরু; তবে কখনই সেরূপ স্থলে অর্থাগমের চেষ্টাও করা উচিত নহে।।২২।।

ইহা দ্বারা সংশয়িত গুরু অর্থ অপেক্ষা নিঃসন্দিগ্ধ অনর্থ প্রতিকার বিশেষ বলিয়া ব্যাখ্যাত হইল।।’২৩।।

বেশ্যা বিবিধ প্রকারের হইয়া থাকে।–গনিকা; রূপাজীবা ও কুম্ভদাসী। তাহাদিগের সঙ্গেও আবার প্রত্যেকেই উত্তম, মধ্যম ও অধম ভেদে ত্রিবিধ। তাহাদিগের মধ্যে যে উত্তমা গণিকা, তাহার লাভাতিশয়ের কথা কথিত হইতেছে—
দেবতায়ন ও দেবগৃহ প্রস্তুত ও প্রতিষ্ঠা, তড়াগ, আরাম (উপবন) প্রভৃতি প্রস্তুতীকরণ, নিম্নপ্রদেশে লোকের গমনাগমের সুবিধার জন্য সেতু, গ্রামের বাহিরে মৃন্ময় গৃহ নির্মাণ করিয়া রস, গন্ধ, ব্রীহি ও রত্নাদি দ্বারা পরিপূর্ণ করিয়া রাখিবে ও প্রখরসৌরকর-তাপিত এবং জাড্যজড়িত পথিকের শ্রান্তি ও জড়িমা দূর করিবার জন্য দানের ব্যবস্থা করিবে। বহুসহস্র গো অন্য ব্যক্তির হস্তে দিয়া ব্রাহ্মণগনকে দান করিবে। দেবতার (স্থাপিত) পূজা ও উপহার প্রবর্তন করিবে। এসকল ব্যয় যে সহিতে পারে, তাহার নিকট হইতে সেই ব্যয়সহিষ্ণুধনের আদায়ার্থ চেষ্টা করিবে। ইহাই হইল উত্তম গণিকা লাভের আতিশয্য।।’২৪।।

সর্বাঙ্গের অলঙ্কার করাইবে। প্রকাণ্ড প্রকাণ্ড গৃহ নির্মাণ করাইবে। মহামূল্য ভাণ্ডোপস্কর (ঘটি ইত্যাদি) ও পরিচারক দ্বারা গৃহ পরিচ্ছদের উজ্জ্বলতা করাইয়া লইবে। এই হইল রূপাজীবা বেশ্যার লাভাতিশয়।।’২৫।।
তদ্ব্যয়সহিষ্ণুধনের গ্রহণ করিবে। রূপাজীবা বেশ্যার মধ্যে যে নায়িকাগুণ ও কলাদিতে অম্বিত উত্তমা, তাহারই এপ্রকার লাভাতিশয়। আর যে মধ্যমা, তাহার অর্ধলাভ ও যে অধমা, তাহার পাদলাভ উন্নেয়।

সর্বদা শুক্ল আচ্ছাদন বসন ও প্রবরণীয় বসন, সর্বদা ক্ষুৎপিপাসা নিবৃত্তিকারক অন্ন ও পান সুগন্ধি তাম্বুলযোগ এবং সুবর্ণলেশযুক্ত অলঙ্কার—এইসকল কুম্ভদাসী বেশ্যার যে প্রধান, তাহার লাভাতিশয়।।’২৬।।
কর্মকরী বেশ্যার মধ্যে যে উত্তম, তাহাই এই লাভাতিশয় যোগ। যাহারা মধ্যম ও অধম, তাহাদের অর্ধ ও পাদলাভ উন্নেয়।।২৬।।

আচার্যগণ বলেন—ইহাদ্বারা সকল মধ্যমা ও অধমার লাভাতিশয়যোগ যোজনীয়।।’২৭।।

আচার্য বাৎস্যায়ন বলেন—দেশ, কাল, বিভব, সামর্থ, অনুরাগ ও লোকপ্রবৃত্তিবশত লাভের অনিয়ততা হেতু ইহার নিশ্চয় বুদ্ধি নহে। কদাচিৎ ন্যূনও হইতে পারে, অধিকও হইতে পারে।।’২৮।।

ইহার ব্যভিচার প্রদর্শিত হইতেছে—
গমনীয় নায়ককে অন্যার নিকট যাইতে না দিবার জন্য, অন্যার উপর আসক্ত নায়ককে অপহরণ করিবার জন্য, অন্যাকে লাভ হইতে বিমুক্ত করিবার জন্য, গম্যনায়কের সংসর্গে নিজের স্থান, বুদ্ধি, গৌরব ও অভিগম্যতালাভ করিবার জন্য, অনর্থ প্রতিকারের জন্য, তাহার সাহায্য পাইবার জন্য, কোন আসক্তের অপরাধ নির্ণয় করিবার জন্য বা পূর্বোপকার অকৃতের ন্যায় দেখিয়া কেবল প্রীত পাইবার জন্য কল্যাণবুদ্ধি নায়কের নিকট অল্পমাত্র লাভেরও প্রতিগ্রহ করিবে।।’২৯।।

কিন্তু যদি গৌরবপ্রার্থিনী হয়, অথবা তাহাকে আশ্রয় করিয়া অনর্থপ্রতিকারে ইচ্ছা করে, তবে প্রতিগ্রহই করিবে না।।’৩০।।

ইহাকে ত্যাগ করিব, অন্যার নিকট সন্ধান করিয়া দিব, এখান হইতে যাইবে, স্ত্রীর সহিত মিলিত হইবে, নিজের অনর্থনাশ করিবে, ইহার দমনকারী উপরিতনলোক স্বামী বা পিতা আসিয়া উপস্থিত হইবে, অথবা ইহার স্থানভ্রংশ হইবে বা এ চঞ্চলচিত্ত, যদি ইহা মনে করে, তবে তৎকালের জন্য তাহার নিকট হইতে লাভ হইতে ইচ্ছা করিবে।।’৩১।।

নিজে ঈশ্বর হইয়াও প্রতিজ্ঞা করিয়াছে; সুতরাং প্রতিগ্রহ লাভ করা যাইবে, কোনও আধিপত্যলাভের অধিকরণ বা স্থান পাইবে, অথবা ইহার বৃত্তি পাইবার কাল এই আসিয়া উপস্থিত হইয়াছে, ইহার বাহন বা স্থলপত্রও আসিবে, নিজরাষ্ট্রের শস্য পাকিবে, ইহার করলে তাহা নষ্ট হইবার নহে, অথবা নিত্যই অবিসম্বাদক (যাহা প্রতিজ্ঞা করে, তাহাই দেয়), ইহা বুঝিলে পরিণামে লাভের ইচ্ছা করিবে। অথবা স্ত্রীর ন্যায় আচরণ করিবে।।’৩২।।

এ বিষয়ে কতকগুলি শ্লোক আছে—
যাহার নিকট ধনলাভ করিতে কষ্ট পাইতে হয় এবং যে রাজার প্রিয় ও নিষ্ঠুর, তাহাকে তখনকার জন্য ত পরিত্যাগ করিবে, আয়তির চেষ্টাই করিবে না। যাহাদিগের বর্জনে অনর্থ হয় এবং গমনে মঙ্গল আছে, তাহাদিগকে যত্নপূর্বক গ্রহণ করিয়া ছলে আনিয়া অভিগমন করিবে।।’৩৩।।

যাহার প্রসন্ন হইয়া স্বল্প উপকারে অগণিত ধন দান করিয়া থাকে এবং স্থুললক্ষ্য ও মহোৎসাহ; নিজের ধন ব্যয় করিয়াও তাহাদিগের অভিগমন কামনা করিবে।।’৩৪।।

ইতি লাভবিশেষনামক প্রকরণ।
ইতি শ্রীমদ্‌বাৎস্যায়নীয়কামসূত্রে বৈশিকনামক চতুর্থঅধিকারণে লাভবিশেষনামক পঞ্চম অধ্যায় সমাপ্ত।।৫।।



Post a Comment

Previous Post Next Post

POST ADS1

POST ADS 2