১.৪ দায়িত্ব ও কর্তব্য

পুরুষের কর্তব্য
যেমন নারী তেমনি পুরুষের পক্ষেও কলাবিদ্যা বা ভালবাসার বিজ্ঞান এমনভাবে শিক্ষা করা উচিত যাতে তার ভার্য্যা বা উপপত্নী সন্তোষের সঙ্গে জীবন যাপন করতে পারে।
বাল্যে ও কৈশোরের গুরুগৃহে বা পাঠশালায় বিদ্যা অর্জন করার পর প্রত্যেক নাগরিকের অর্থোপার্জন করায় নিযুক্ত হওয়া অবশ্য উচিত।
শাস্ত্রে আছে, ব্রাহ্মণ লোকের কাছ থেকে দান গ্রহণ করবে, ক্ষত্রিয় যুদ্ধে জয়লাভ করে কৃতিত্ব দেখাবে, বৈশ্য যুবক ব্যবসা-বাণিজ্যে অর্থ উপার্জন করবে-আর শূদ্র যুবক পরের সেবা করে জীবন যাপন করবে।
অর্থ উপার্জনের পর নাগরিক তার নিজের জন্যে বসত বাড়ি তৈরী করবে। সে সর্ব প্রকার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করবে।
মানুষের উচিত রাজধানীতে বা অন্য বড় শহরে বাসগৃহ নির্মাণ করা।
তবে বহু গণ্যমান্য লোকের সঙ্গে তার সহৃদয়তা বা বন্ধুত্ব হয়ে থাকে।

গৃহ নির্মাণ কলা
বাড়ি এমন স্থানে নির্মিত হওয়া উচিত, যাতে জল পাবার কোন কষ্ট না হয়।
বাৎস্যায়ন পড়ে মনে হয়, যে সময়ের কথা লেখা হচ্ছে সে সময় শহরে নগরে জল পাবার ব্যবস্থা ভাল ছিল না।
এই বাড়ি ভিন্ন ভিন্ন উদ্দেশ্য সাধন করতে ভিন্ন ভিন্ন অংশে গঠিত হওয়া উচিত।
বাড়িতে ফুলবাগান, উদ্যান, লতাকুঞ্জ ইত্যাদি থাকবে। এ অংশের কক্ষগুলি দুই ভাবে বিভক্ত হবে-বহির্বাটী ও অন্তঃপুর। অন্তঃপুর হবে নারীদের আবাস্তবর্হিবটীতে থাকবে, বৈঠকখানা, যেখানে বিভিন্ন সুরসিক জ্ঞানী বা বাণিজ্য সম্পর্কিত লোকেরা বসে কথাবার্তা বলবে।
এই বৈঠকখানায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে খেলাধুলাও হতে পারে। বৈঠকখানার মেঝে মাদুরের দ্বারা ও জানালা পট্ট বস্ত্রের দ্বারা আবৃত থাকবে। এখানে একটি সুন্দর বিছানা থাকবে-একধারে ফুলদানীতে ফুল থাকবে। বালিশ বেশ নরম হবে।
প্রধান পর্যাঙ্কের কাছে থাকবে একটি শয্যা- সেখানে গৃহকর্তা তাঁর প্রিয় নারীদের সঙ্গে রতি কার্য করলেও শয্যা বসন সিক্ত বা কলুষিত হবে না।
এর মাথার দিকে থাকবে ব্রাকেট গৃহ দেবতার একটি প্রতিচ্ছবি বা ছবি।
এই ছবির নীচে থাকবে একটি টেবিল। এই টেবিলে থাকবে যে দ্রব্য তা হলো-
সুগন্ধি দ্রব্য, পুষ্পমাল্য, মোমবাতি, সুগন্ধি পান, দাড়িম্বের খোসা ও তাম্বুল । বিছানার তলায় থাকবে পিকদানী।
এছাড়া, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের জন্য থাকতে পারে বীণা, ছবি আঁকার পাত্র, ব্রাশ, রঙ, বই, হাতীর দাঁতের তৈরী বস্তু, পুষ্পনির্মিত স্তবক প্রভৃতি।
ঘরের বিছানা ছাড়া, বালিশ থাকবে-সব ঘরে মাদুর বিছানা থাকা উচিত।
দাবা পাশা থাকবে ঘরে।

বাইরের গৃহসজ্জা
এই বৈঠকখানা ঘরের বাইরে থাকবে বারান্দায় ময়না, টিয়া প্রভৃতি পাখি।
গ্রীষ্মকালের জন্যে থাকবে বাসগৃহের পাশে একটি বাগান। বাগানটি হবে মনোরম।
এই বাগানে একটি ছায়াযুক্ত গাছের তলে থাকবে একটি দোলনা। এই দোলনাটি হবে সুদৃশ্য।
এই বাগানে ফোয়ারা থাকলে ভাল হয়।
না থাকলে, কয়েকটি সুদৃশ্য বেদী থাকবে। বেদীতে থাকবে সুগন্ধি ফুলচন্দন। এর চারিদিকে লতাপাতা ও সুগন্ধি ফুলের বৃক্ষ থাকবে।

নাগরিকদের দৈনিক জীবনধারা
১। সকালে উঠে নাগরিক প্রাতঃকৃত্যাদি করবে। তার মধ্যে দাঁতমাজা, মুখ ধুয়ে, ফেলা ইত্যাদি থাকবে।
২। ্লান করবে সুগন্ধি জল দিয়ে। তোয়ালে দিয়ে গা মুছবে।
৩। চন্দনাদি সুগন্ধি দ্রব্য অঙ্গে লেপন করবে। ঠোঁটে একটু লিপষ্টিক লাগাবে। গরায় একটি মালা ঝোলাবে।
৪। একটি আয়নায় ভাল করে মুখ দেখে কেশ রচনা করবে।
৫। অবশেষে নিজের কাজে বের হবে।

সম্ভ্রান্ত নাগরিকের উচিত
১। প্রত্যহ একবার ্লান করবে।
২। একদিন অন্তর ভাল করে গাত্রমর্দন বা গাত্র মার্জনা করা।
৩। প্রতি তৃতীয় দিনে মালা দরকার।
৪। প্রত্যেক চতুর্থ দিনে মুখের দাঁড়ি গোঁফ কামানো আরামদায়ক হয়ে থাকে।
৫। প্রত্যেক পঞ্চম দিনে মাথার চুল কাঁটা উচিত।
৬। প্রতি দশদিন অন্তর দেহের গোপনীয় স্থানের কেশ মুণ্ডন করা উচিত।
৭। রোদের সময় বিনা ছাতায় বের হবে না। তা হলে শরীর থেকে বেশী ঘাম বের হতে পারে বেশী ঘাম দুর্গন্ধ যুক্ত হয়।
৮। দিবারাত্রে দুবারের বেশি ভোজন্তদুপুর ও সন্ধ্যা-প্রত্যহ দুবার প্রধান আহারের পর উচিত প্রিয় পাখিদের কথা বলা শেখানো। ভেড়া ইত্যাদি থাকলে তাদের কৌতুক যুদ্ধ শেখানো।
৯। সকালে মুখ, হাত, পা, ধুয়ে কিছু সামান্য খেয়ে বন্ধুবান্ধব প্রভৃতিদের সঙ্গে কথাবার্তা বলবে। দুপুরে খাবার পর দিবানিদ্রা বা ঘুম হবে।
১০। দিবা নিদ্রার পর সংগীত চর্চা বা ক্রীড়া প্রভৃতি চলতে পারে।
১১। তারপর বাইরে কাজ থাকলে বের হয়ে-সন্ধ্যায় ফিরবে।
১২। বাড়ি ফিরে বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনা, গল্প প্রভৃতি করতে থাকবে। তারপর বন্ধুদের বিদায় দেব।
১৩। তাপর প্রণয়িনীদের সঙ্গে দেখা করবে-বা তার আগমন প্রতীক্ষা করবে। সে এলে কুসুমাস্তীর্ণ শয্যায় তাকে বসাবে। মধুর নরম বাক্য বলে তাকে আনন্দ দেবে। তার আসতে বিলম্ব হলে তার জন্যে দূত পাঠাবে।
১৪। দূতীর বাক্যেও যদি প্রণয়িনী না আসে তা হলে নিজে তার বাড়ি যাবে, নানা সন্তোষ করে তাকে নিয়ে আসবে। যদি বৃষ্টি থাকে ও তার গা বা বস্ত্র ভিজে যায়, তাকে শুকনো বস্ত্র পরিয়ে দেবে। যেন বন্ধু বান্ধবেরা সে সব কাজে সাহায্য না করে। নিজের বস্ত্রাদি ভিজে গেলেও পরিবর্তন করবে।
১৫। তারপর সবাইকে বিদায় দিয়ে প্রণয়িনীর সঙ্গে সুমধুর সম্ভাষণ করবে।
১৬। প্রণয়িনীকেই সমস্ত রাত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ স্থান দান করা অবশ্য কর্তব্য।
যদি এ বিষয়ে কোনও ভুল হয়, তার জন্যে প্রণয়িনীর কছে ক্ষমা প্রার্থনা করতে কোন দোষ নেই।
উপরে সে সব জীবন বৃত্ত লিখিত হলো, তা শুধুমাত্র ধনী ও যার অবসর প্রচুর তাদের পক্ষেই সম্ভব। রাতে প্রণয়িনী নিয়ে সম্ভোগ ঠিক ভাবেই হতে পারে।

নৈমিত্তিক নাগরিককৃত বা সামাজিক কর্ম
উপরের প্রাত্যহিক কর্ম ছাড়া অনেক সামাজিক কাজ ও অনুষ্ঠান নাগরিকের পালন করা উচিত।
এতে নাগরিক সমাজের মধ্যে একটি সম্মানও প্রতিষ্ঠা হয়। বাৎস্যায়ন নিুলিখিত সামাজিক অনুষ্ঠানগুলির অবশ্য পালনীয় বলছেন।
১। ঘটা নিবন্ধক
দেবতার উদ্দেশ্য অনুষ্ঠিত সব উৎসবে নাগরিকের অবশ্যই যোগদান করা উচিত। এতে দেশ বা বিদেশ থেকে আগত শিল্পীরা সংগীত ও অন্য নানা কলা উৎসবের নৈপুণ্য দেখাতে পারে। এতে মানব সংস্কৃতি উন্নতি লাভ করে। মাসে অন্ততঃ একবার তা অনুষ্ঠিত হওয়া উচিত।
২। গোষ্ঠী সমন্বয়
সমান বয়স্ক বা সমান চরিত্র বা সম চরিত্রবান যুবকদের মিলন ও সমন্বয়। এতে ভাবের আদান্তপ্রদানে প্রচুর সাহায্য হয়ে থাকে।
এরূপ জন সমাবেশ কোন সম্ভ্রান্ত রাজকর্মচারীর বৈঠকখানায় বা অলিন্দে, কোন নৃত্যকলয়ে বা বন্ধু-বান্ধবদের বহিঃকক্ষে হওয়া উচিত। এই সম্মিলনীতে নৃত্যগীত বা কোন প্রবন্ধ পাঠ হতে পারে। নানা কলা প্রদর্শনও এখানে হতে পারে।
৩। সমাপালক
পালাক্রমে বন্ধুদের বাড়ীতে গিয়ে সেখানে নানা প্রকার সুস্বাদু ফল নিয়ে তার সঙ্গে সুরা পান হয়ে থাকে। এতে আগে সম্মিলিত গণিকাদের সুরাপাত্র দেওয়া হয়-তাদের পান হয়ে গেলে নাগরিকবৃন্দ পান করবে। সেই সঙ্গে নানা রকম ফল খাওয়া হয়।
৪। উদ্যান প্রমোদ
ভিন্ন ভিন্ন বন্ধুর বাগানে প্রমোদ উৎসব হয়ে থাকে। যাঁরা অংশ গ্রহণ করেন তাঁরা অশ্বে আরোহণ করে দাসদাসী নিয়ে সেখানে যাবেন। এখানে নানা খেলাধূলা, মোরগ লড়াই, নৃত্যগীত, যাদুবিদ্যা প্রভৃতি হয়ে থাকে। এইভাবে সারাদিন আনন্দে কাঠিয়ে সন্ধ্যাবেলা বাড়ী ফিরবে। ফেরার সময় বাগান থেকে পুষ্পস্তবক ও পুষ্পমালা প্রভৃতি নিয়ে ফিরবে।
৫। উপরে যেসব উৎসব বর্ণনা করা হলো তা ছাড়া
সাধারণ নাগরিকদেরও কতকগুলি উৎসবে যোগদান করা অবশ্য কর্তব।
তা এবারে একে একে বলা হচ্ছে।
() দেওয়ালি উৎসব।
() পূর্ণিমা উৎসব বা পূর্ণিমার রাতে নানান উৎসব।
() বসন্ত উৎসব-বসন্তকালে।
() অপক্ক আম্রোৎসব (শেখর লঞ্জলিকা) আম পাকার আগে।
() পিষ্টক উৎসব বা পিঠে বানানো।
() বিশ খাদিকা-ফাল্গুন্তচৈত্র মাসে।
() নব পত্রিকা-বর্ষার প্রথমে।
() হোলি উৎসব।
() পাঞ্চালি উৎসব বা ভাঁড়ামি।
() শিমুল উৎসব-শিমুল ফুল নিয়ে খেলা।
() কদম্ব উৎসব-কদম্ব ফুল নিয়ে খেলা।
() যব উৎসব-যবের গুঁড়া নিয়ে খেলা।
() ঝুলন উৎসব।
() মদন উৎসব-চৈত্রমাসে মদন দেবের সম্মান।
() দমনকে উৎসব-ফুল নিয়ে খেলা।
() অশোক উৎসব-ফুল নিয়ে খেলা।
() পুষ্পচয়ণ উৎসব।
() আম্রলতিকা-কচি আমপাতা নিয়ে খেলা।
() ইক্ষুমঞ্জিকা-আখ খাবার প্রতিযোগিতা।

সম্ভ্রান্ত নাগরিকের সঙ্গী ও কিংকর
পীঠ মর্দ
নাগরিকের সহযাত্রীদের মধ্যে পীঠ মর্দন সর্ব প্রধান। প্রেম বিজ্ঞানে সে বিশেষ পারদর্শী। তার স্ত্রী নেই পুত্র কন্যা নেই। সংসারে কারও হেপাজত নেবার বাধ্যবাধকতা নেই।
দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়ানো ও প্রেম বিষয়ে অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ই তার জীবনের কাজ।
অতি দরিদ্র সে কিন্তু খাওয়া পরা কোনও সম্ভ্রান্ত নাগরিকের দায়িত্বে চলে।
বাৎস্যায়নের কালে এরূপ পীঠ মর্দ প্রায়ই সম্ভ্রান্ত নাগরিকের থাকত। বর্তমান যুগে এরূপ লোক খুব অল্পই দেখা যায়।

বিট
এ আর এক প্রকারের লোক। বেশ লেখা পড়া জানা ও অভিজ্ঞ। এক কালে যথেষ্ট ধন সম্পত্তি ছিল। কিন্তু কাম সম্ভোগে সমস্তই হারিয়েছে।
মৃচ্ছকটিক নামক বহু পুরানো সংস্কৃতি নাটকে এরূপ একটি মানুষের অবতারণা দেখা যায়। এ সকল লোক ধনী ও প্রভুত্ব সম্পন্ন ব্যক্তির চিত্ত জয় করে থাকে।
নিজে কিছু উপার্জন করে না। বড় লোক সঙ্গীর ব্যয়েই তার বাবুয়ানা চলে যায়।

বিদূষক
ইংরেজীতে যাবে বলে ‘বাফুন্থ’ বা ‘ক্লাউন’ তাদেরই সে আমলে বিদূষক বলা হতো। এদের অন্য নাম ছিল ভাঁড়। ভাঁড়ামিই তার ব্যবসা। বড় বড় লোকও রাজরাজড়াদের সঙ্গী। কোনও নারীর সঙ্গে প্রেম যুদ্ধে তিনিই হলেন ঐ ধনী রাজার বা সম্ভ্রান্ত ব্যক্তির সাক্ষী বা দূত।
বিদূষক সাধারণতঃ অবিবাহিত এবং ব্রাহ্মণ বংশোদ্ভূত। তিনি তাঁর সম্পত্তি নষ্ট করেছিলেন। এবং সাধারণত এক দরিদ্র ব্যক্তি।
রাজার বা সম্ভ্রান্ত নায়কের বড় বড় সভায় বিদূষক অনেক কৌতুকপূর্ণ কতাবার্তা বলেন ও সভাষদবর্গকে বিভিন্ন কৌতুক দ্বারা উল্লাসিত করে থাকেন।
সংস্কৃত নাটকে দেখা যায় যে এঁরা নায়কের সহচর-এঁরা অভীষ্টা নারীর প্রতি দৌতকার্য্য করে থাকেন। আধুনিক যুগে গোপাল ভাঁড়ের কতা সকলে জানেন সম্রাট আকবরের সভায় রসিক বীরবল ঐ বিদূষকের একটি দৃষ্টান্ত। বিদূষকের মত কাজ অনেক স্ত্রীলোকেরাও করে থাকে। তারা কেউ কেউ () উদাসিনী-সন্ন্যাসিনী যিনি বিজ্ঞানে বিশেষ পারদর্শিনী () নারী নাপতানী () অসৎ দরিদ্রা নারী () নিঃসন্তান নারী () কোনও বৃদ্ধ বেশ্যা তপস্বিনী। এঁরা সম্ভ্রান্ত বংশের কুল নারীদের নাগর সংগ্রহে প্রায় দূতীকার কাজ করে থকেন।

দূতীর কাজ
এই দূতীরা খুব কুশলী হয়ে থাকেন।
এরা নায়ক বা নায়িকার গুণাবলী এমন সুন্দর ও বিশদভাবে বা বাড়িয়ে পরস্পরের কাছে বলে থাকেন যে তারা মুগ্ধ হতে বাধ্য হয়।
তাই দূতীকাদের সে আমলে বিশেষ কদর ছিল-কারণ সে আমলে লোকে জানত যে দূতীকারা নারীর পক্ষে অপরিহার্য।
বিশেষ করে উচ্চ রাজ পরিবারে বা খুব উচ্চ রাজ পরিবারে বা খুব ধনী পরিবারের পক্ষে তারা ছিল অপরিহার্য।
এই দূতীকারের গুণাবলীও ছিল অশেষ-তারা হাস্যরস, নাট, গান ইত্যাদি জানত।



Post a Comment

Previous Post Next Post

POST ADS1

POST ADS 2