চুম্বন
একটি শিল্প
নায়ক
নায়িকা পরস্পরকে জড়িয়ে ধরার
পরেই দু’জনের মধ্যে শুরু হয়
কামক্রিয়া। এই কামক্রিয়ার
মধ্যে চুম্বন, স্তন
নিপীড়ন, নখাঘাত
ও দংশন আছে।
বাৎস্যায়ন
বলেন- এসব
কাম-ক্রিয়ার
মধ্যে কোনটি সবার চেয়ে প্রশস্ত
বা কার্যকরী তা নির্ভর করে
নারী ও পুরুষ দু’জনের ইচ্ছার
উপরে।
যে
অঙ্গটি যে সুন্দর বলে বিবেচনা
করে, তেমনি
সেই অঙ্গকে উপভোগ করতে বেশি
আগ্রহান্বিত হয়।
তবে
এ্সব কাম-ক্রিয়া-যেমন
চুম্বন, স্তন
নিপীড়ন, নখাঘাত,
দংশন, এ
সব সাধারণতঃ মৈথুনের আগেই
দু’জন করে থাকে। মৈথুনের পর
এসবের প্রতি আর্কষণ থাকে
না।
যখন
কাম উত্তেজিত হয়, তখন
কোন ক্রিয়া আগে বা পরে সে জ্ঞান
থাকে না। তখন যে কাম-ক্রিয়া
ভাল লাগে নায়ক নায়িকা তাই শুরু
করে দেয়। নারীর ইচ্ছা এতে ধীরে
ধীরে বাড়তে থাকে।
চুম্বনের
স্থান
বাৎস্যায়ন
বলেন- চুম্বন
আরম্ভ হয় ললাট, সিঁথি,
গন্ড,
চঞ্চু আর পুরুষের
বক্ষে, নারীর
স্তনে, তারপর
অধরে, তটে
এবং মুখের ভেতরে।
এ
ছাড়াও বিভিন্ন দেশের লোকেরা
কেউ উরু, কেউ
বাহু, কেউ
বা যোনিও চুম্বন করে থাকে।
আসলে যে দেশে যে প্রথা সেইমত
হয়ে থাকে।
চুম্বন
পদ্ধতি
বাৎস্যায়ন
চুম্বনের পদ্ধিতি ভালভাবে
নির্দেশ করেছেন। তা হলো অধর
দু’টি ফুলের মতই প্রস্ফুটিত
ও কুঞ্চিত হয়ে প্রেমিক বা
প্রেমিকার অধর বা স্তন সংলগ্ন
হয়ে থাকবে।
অনেক
রকমের চুম্বন আছে। অঙ্গের যে
স্থানে ওষ্ঠধর দিয়ে চুম্বন
কার্য করা হয় তার উপরেই তা
নির্ভর করে।
ওষ্ঠ
বা অধরের সঙ্গে ওষ্ঠ বা অধরের
যোগ হলো শ্রেষ্ঠতম চুম্বন।
প্রাথমিক
চুম্বন
যে
নর-নারী
কখনও কোনও যৌন সংসর্গ করেনি,
তাদের পক্ষে
চুম্বনের কতকগুলি নিয়ম আছে।
তা
একে একে বলা হচ্ছে।
নিমিতক
চুম্বন
যখন
কোনও পুরুষ কোন নারীকে প্রথম
স্বীকার করিয়েছে একটি একটি
চুম্বন দিতে- তা
হলো নিমিতক চুম্বন।
তখন
নারী লজ্জায় অভিভূতা হয়ে পড়বে।
লজ্জার মধ্যেও সে সঙ্কুচিতা
ভাবে মুখ বাড়িয়ে চুম্বন করতে
তার ঈস্পিত পুরুষকে সুযোগ
দেবে। অধর বা ওষ্ঠ এগিয়ে দিতে
কিন্তু বিশেষ আগ্রহ দেখায়
না।
স্ফুরিতক
চুম্বন
পুরুষ
তার ওষ্ঠ অধরের মধ্যে নারীর
অধর ধারণ করে। নারীও এরূপ করতে
পারে- কিন্তু
সামান্য পরিচয়- তাই
লজ্জায় কামড়াতে পারে না।
থর্থর্
করে কাঁপতে থাকে। পুরুষ জোর
করে চুম্বন করে, নারী
যেন তা এড়িয়ে নিতে চেষ্টা করে,
কিন্তু তা নিজের
ইচ্ছায় না। একেই বলে স্ফুরিতক
চুম্বন।
ঘট্টিতক
চুম্বন
ঘট্টিতক
এমন একটি চুম্বন যাতে নারীই
প্রধান অংশ গ্রহণ করে থাকে।
সে
তখন একটু পরিচিত হয়েছে,
লজ্জা তার
সামান্য কমে গেছে।
সে
তখন প্রেমিকের চোখ দু’টি নিজের
করতল দ্বারা আবৃত করে দেয়।
সঙ্গে সঙ্গে নিজের দু’টি চোখ
বন্ধ করে।
তারপর
অতি ধীরে অতি লজ্জায় দু’জনে
পরস্পর পরস্পরকে চুম্বন করে
থাকে।
নারী
তারপর নিজের সুখে পুরুষের
দুটি ওষ্ঠ নিয়ে ধীরে ধীরে
চুষতে থাকে এতে সে অনির্বচনীয়
আনন্দ লাভ করে।
চুম্বনের
অন্যান্য প্রকাভেদ
সাধারণ
ভাবে পুরুষ নারীর মধ্যে পরিচয়
গভীর হলে তারা যে কয় প্রকারে
পরস্পরকে চুম্বন করে থাকে তা
এবারে বলা হলো।
সাধারণ রতি ক্রিয়ার আগে যেগুলি হয়ে থাকে, তা নিম্নে দেওয়া হলো।
সম
চুম্বন
প্রেমিক,
প্রেমিকা
সোজাসুজি মুখে মুখ, ঠোঁটে
ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন ক’রে থাকে।
সেজন্য একে বলে সমচুম্বন।
তর্য্যক
চুম্বন
এরূপ
চুম্বনে পুরুষ নারীকে দৃঢ়ভাবে
জড়িতে ধরে- তারপর
চুম্বন করে।
দু’জনের
ঠোঁট পরস্পর আড়াআড়ি ভাবে থাকে-
তারপর সজোরে
চুম্বন হয়।
তাই
তাকে বলে তির্য্যক চুম্বন।
উদভ্রান্ত
চুম্বন
পুরুষ
একটি হাত দিয়ে নারীর অধর নিজের
দিকে ফিরিয়ে ধরে অন্য হাত দিয়ে
তার চিবুক ধরে রাখে। তারপর
তার দুটি ঠোঁটে চুমু খায়।
অবপীড়িতক
চুম্বন
যখন
পুরুষ তার দুটি ঠোঁট দিয়ে বেশ
পীড়ন করে বা সজোরে চাপ দিয়ে
নারীকে চুম্বন ক’রে থাকে থাকে
তখন তাকে বলে অবপীড়িতক চুম্বন।
আর
যখন জিহ্বা দ্বারা সেই চোষণ
করে তখন তাকে বলে অধর পান।
আকৃষ্ট
চুম্বন
যখন
পুরুষ তার বুড়ো আঙ্গুল ও
অন্যান্য আঙ্গুল নিয়ে নারীর
অধর একটি গোলাকার বলের আকারে
পরিণত করে- তারপর
তা নিজের জিহ্বা দিয়ে চুষতে
থাকে- তখন
তাকে বলা হয় আকৃষ্ট চুম্বন।
চুম্বন
প্রতিযোগিতা
বাৎস্যায়ন
বলেন, কামক্রিয়ার
আনন্দ পাবার জন্যে পুরুষ ও
নারী চুম্বন প্রতিযোগিতা
করতে পারে।
এর
অর্থ হলো, পুরুষ
ও নারী পরস্পর পরস্পরকে চেপে
ধরে ঠোঁটে ঠোঁট লাগিয়ে চুম্বন
করবে।
তার
আগেই প্রতিযোগিতা স্থির করে,
কে বেশিক্ষণ
চুম্বন করতে পারে।
সাধারণতঃ
পুরুষ জয়ী হবে- তখন
নারী কৃত্রিম তর্ক করবে।
বলবে-অন্যায়ভাবে
আমাকে হারানো হয়েছে।
তখন
পুরুষ তাকে মিষ্ট বাক্যে
ভুলিয়ে আবার চুম্বন প্রতিযোগিতা
শুরু করবে।
এবারে
নারীকে ইচ্ছা করে জয়ী করা হবে।
তখন সে আনন্দে হাসবে,
নাচবে,
অঙ্গভঙ্গী
করবে।
কিন্তু
তখন সে যদি পুরুষকে ঠাট্টা
করে, তখন
রাগলে চলবে না।
উত্তর
চুম্বিতা
এর
উত্তরে অর্থাৎ পুরুষ হেরে
গেলে সে রাগ করবে না। বরং
নায়িকাকে আদর করে চুম্বন করবে-
তাকেই বলে উত্তর
চুম্বিতা।
সম্পুটক
চুম্বন
দু’জনে
ঠোঁটে ঠোঁট মিলিয়ে এক প্রকার
শিষ দেবার মত শব্দ করে চুম্বন
করে- তাকে
বলে সম্পুটক চুম্বন।
রাগোদ্দীপক
চুম্বন
পুরুষ
ঘুমোলে বা নায়িকা ঘুমোলে,
অন্যজন ঘুম
থেকে জাগাবার জন্য ঘন ঘন হাল্কা
চুম্বন করে- তাকে
বলে রাগোদ্দীপক চুম্বন।
অনেক
সময় মিলন কালেও প্রেম বর্ধিত
করার জন্যে এটি হতে পারে।
প্রতিবোধিক
চুম্বন
নিজের
মনের ভাব প্রকাশ করতে না পারলে-
কোনও মূর্তি,
ছবি বা শিশুকে
চুম্বন করে অপরকে বোঝান হয়।
আমি তোমায় ভালবাসি। তাকে
প্রতিবোধিক চুম্বন।
জিহ্বা
যুদ্ধ
যখন
পুরুষ বা নারী একজন অন্যজনের
মুখে পরস্পর জিহ্বা প্রবেশ
করিয়ে চুম্বন করতে থাকে,
তখন বলা হয়
জিহ্বা যুদ্ধ। এতে একে অন্যের
মুখে জিহ্বা প্রবেশ করায়-
দুইজন বার বার
এই রকম করতে থাকে।
নারীর
শরীরের কোন্ কোন্ স্থানে
পুরুষ চুম্বন করতে পারে,
তার নির্দেশও
দিয়েছেন বাৎস্যায়ন।
১।
গাল বা গণ্ডদ্বয়।
২।
ওষ্ঠ-অধর।
৩।
কপাল বা ললাট।
৪।
মাথা ও চুল।
৫।
চক্ষুদ্বয়।
৬।
স্তনদ্বয় ও দন্তবৃন্ত সজোরে
চুম্বন।
৭।
কাঁধ, ঘাড়,
বুক।
৮।
নিতম্বদ্বয়।
৯।
জঘনদ্বয়।
১০।
কামাদ্রি ও যোনিপ্রদেশ।
শরীরের
বিভিন্ন স্থান চুম্বন
অবস্থা
অনুযায়ী আরও বিভিন্ন প্রকার
চুম্বন প্রচলিত আছে-সেগুলির
সম্বন্ধেও এখানে আলোচনা করা
হচ্ছে।
অবস্থা
অনুযায়ী চুম্বন
১।
উদ্দীপক চুম্বন – ঘুম থেকে
জাগাবার জন্য।
২।
চলিতক চুম্বন – পুরুষ যখন কাজে
ব্যস্ত থাকে তখন তাকে বিব্রত
করার জন্যে চুম্বনকে চলিতক
বলে।
৩।
সঙ্কেত চুম্বন – যখন বাড়ি ফিরে
পুরুষ দেখে নায়িকা রাগ করেছে
বা কটট রাগে মুখ আচ্ছন্ন তখন
ঘন ঘন চুম্বন।
৪।
ছায়া চুম্বন – পরস্পর পরস্পরকে
মনের ভাব জানাবার জন্যে ছায়াকে
চুম্বন করা।
৫।
জিজ্ঞাসার চুম্বন – যখন নারী
পুরুষ পরিচিত, দু’জনে
পাশাপাশি বসে বা শুয়ে আছে,
তখন একজন অন্যজনের
মনের ভাব জানবার জন্যে নারীর
দেহে মৃদু হাত বুলোতে পারে,
কিংবা কোনও
স্থানে মৃদু চুম্বন করতে পারে।
একে বলা হয় জিজ্ঞাসা চুম্বন।
৬।
সুরত চুম্বন – সুরত চলার সময়
দ্রুত বা ঘন ঘন পরস্পর পরস্পরকে
চুম্বন করলে তাকে সুরত চুম্বন
বলে।