৬.১০ রতারম্ভ, রতাবসানিক ও প্রণয়কলহ

ষষ্ঠ ভাগ – দশম অধ্যায়

এইরূপে রতব্যাপার ঔপরিষ্টকান্ত কথিত হইল। তাহার আরম্ভ ও অবসানকালে কি করিতে হইবে, তাহা বলা হয় নাই। এখন অবসর মত রতজনিত রতারম্ভাবসানিক ব্যাপার বলা হইতেছে।

যদ্যপি প্রীতিবিশেষের পর রতারম্ভিক ব্যাপারের কীর্তন করা এবং এইখানে রতাবসানিক ব্যাপারের উপদেশ করা উচিত ছিল; কারণ অনুষ্ঠানক্রম সেইরূপেই ত প্রতীত হয়; তথাপি আলিঙ্গনাদিব্যাপার প্রীতিসম্বন্ধ বলিয়া, প্রীতিবিশেষের কীর্তনের পরেই আলিঙ্গন ব্যাপারের কীর্তন করা হইয়াছে এবং যখন রতব্যাপারের সমস্ত বিষয় নির্ধারণ করা শেষ হইয়াছে; সুতরাং রতাবসানিক ব্যাপার বলিবার আবশ্যক হইয়াছে—অথচ রতারম্ভিক ব্যাপার না বলিলে, রতাবসানিক ব্যাপার নির্ধারণ করা যায় না; কারণ, রতাবসানিকব্যাপার রতারাম্ভিকব্যাপারের অনুষঙ্গ; তখন প্রথমে রতারম্ভিক ব্যাপারের উপদেশ করা আবশ্যক হইয়াছে। এইজন্য প্রথমে রতারম্ভিক ব্যাপারের প্রতি লক্ষ্য করিয়া বলা হইতেছে—

নাগরিক, মিত্রজনের সহিত ও পরিচারকের সঙ্গে পুষোদ্যানে যাইয়া, তথাকার বহিঃস্থ ও অন্তঃস্থ রতিগৃহ পুষ্পাদি দ্বারা সজ্জিত হইলে, সুরভি রূপ দ্বারা বাসিক করিলে, যথাস্থানে শয্যাদি প্রস্তুত করিয়া দিলে, সম্পাদিতস্নানাভরণা পরিমিতপানকারিণী নায়িকাকে সান্ত্বনাকর কথায় আবার পান করিতে প্রবৃত্ত করিবে। নায়িকার দক্ষিণ দিকে বসিবে। কেশপ্রলাবে, বস্ত্রান্তে, বা নীবীপ্রদেশে ধরিবে। রতির জন্য বামবাহুদ্বারা অনুদ্ধতভাবে আলিঙ্গন করিবে। পূর্বপ্রকরণে কথিত পরিহাস ও অনুরাগকর কথা পাড়িয়া দিবে। সমস্যাদ্বারা গূঢ় ও অশ্লীল বিষয়ের অবতারণা করিয়া পরিভাষণ করিবে। সনৃত্য বা অনৃত্য গীতবাদ্য করিবে। কলার বিষয় অবলম্বন করিয়া কথোপকথনে প্রবৃত্ত হইবে। আবার পান করিবে এবং পান করাইবার চেষ্টা করিবে। যখন দেখিবে অনুরাগ জন্মিয়াছে, তখন অন্যান্য জনকে কুসুম, অনুলেপন ও তাম্বুল দান করিয়া বিদায় দিবে। তারপর, বিজনস্থলে নায়িকাকে পূর্বকথিত আলিঙ্গনাদি দ্বারা উদ্ধর্ষণ করিবে, যাহা হইলে শয্যা লইবার চেষ্টা করে। তারপর নীবীবিশ্লেষণাদি, যাহা পূর্বে কথিত হইয়াছে, সেই অনুসারে সম্প্রয়োগের উপক্রম করিবে। ইহাকে রতারম্ভ কহে। (ইহা অবশ্য পূর্বেই বলা উচিত ছিল)।।’১।।

রতাবসানিক ব্যাপার এই যে, রমণান্তর অপরিচিত ব্যক্তিদ্বয়ের ন্যায় সলজ্জভাবে পরস্পর পরস্পরকে না দেখিয়াই পৃথক পৃথক স্থানে যাইয়া শৌচকার্য সমাধা করিবে। ফিরিয়া আসিয়া নির্লজ্জ পরিচিত ব্যক্তিদ্বয়ের ন্যায় উপযুক্ত স্থানে বসিয়া, তাম্বুলভক্ষণ, অচ্ছীকৃত চন্দন বা অন্য কোন অনুলেপন তাহার গাত্রে নিজেই মাখাইয়া দিবে। বাম হস্ত দ্বারা তাহাকে আলিঙ্গন করিয়া, আবার চষক (মদ্যপানপাত্র) হস্তে লইয়া, সান্ত্বনাকর কথায় সুরা পান, কিংবা জলানুপান, খণ্ডখাদ্য (সন্দেশ রসগোল্লা প্রভৃতি) বা অন্য কিছু ভোজন করাইবে। সহ্য হয়, সেইরূপ খাদ্য উভয়েই উপভোগ করিবে। সে সময়ে বৃংহণীয় বলিয়া মাংস বা ব্রীহিনির্যূহ, অচ্ছরসক, অম্লযবাগূ (মাংস সিদ্ধ), ভূষ্টমাংস, ও অরদংশ বা পানক, আম্র, শুষ্কমাংস, মাতুলুঙ্গের (টেবালেবু অর্থাৎ কলম্বালেবুর) অম্ল শর্করার যোগে যথায় যেমন প্রচলিত ও দৈনিক স্বভাবের অনুমোদিত, তাহা খাইবে। সেই সময়ে ‘এটি বড় মিষ্ট-মধুর, বেশ কোমল, খুব ভালো পরিষ্কার’ এই বলিয়া একটু একটু কামড়াইয়া সেই সেই খাদ্য নায়িকাকে উপহার দিবে। যদি হর্ম্যতলস্থিত হয়, তবে চন্দ্রিকাসেবনার্থ বাহিরে আসন করিবে। সেখানে যাইয়া বসিয়া অনুকূল কথায় প্রসঙ্গ উত্থাপন করিবে। নায়কের ক্রোড়সংলগ্ন হইয়া চন্দ্র দেখিতে থাকিলে, নায়িকাকে নক্ষত্ররাজির পরিচয় করিয়া দিতে থাকিবে। অরুন্ধতী, ধ্রুব ও সপ্তর্ষিমণ্ডল ক্রমে ক্রমে দেখাইবে। (ইহা আচার্যের স্বাভাবিক উক্তি)। –এই হইল রতাবসানিক ব্যাপার।।’২।।

এই দুইটি প্রয়োগকে লক্ষ্য করিয়া বলিতেছেন—

রতাবসানে উপকরণ পরিষ্কৃত হইলে, প্রীতি—অত্যাধিক অনুরাগ জন্মাইয়া থাকে। তাহাতে যদি বিশ্বাসের সহিত কথার সম্বন্ধ থাকে, তবে আরও উৎকৃষ্ট হয়। পরস্পরের প্রীতিকর, আত্মভাবের অনুবর্তনকর ক্ষণে-ক্ষণে প্রীতিবিলোকন ও ক্ষণে-ক্ষণে ক্রোধ করিয়া, তাহার উপসংহার করিলে, হল্লীসক ক্রীড়া (রাসক্রীড়া) দ্বারা গান করিলে এবং সেই দেশজ গীত গান করিতে করিতে অনুরাগ দ্বারা ক্ষরিতবাষ্পপূর্ণ নয়নে মনোহর বস্তু চন্দ্র ও মণ্ডলাদি দর্শন করিলে, প্রথম সন্দর্শন হইলে পূর্বে যে সব মনোরথ হইয়াছিল এবং আবার বিয়োগ যে সব দুঃখ হইবে, সে সব বলিলে এবং সেই কথনের পর, রাগভরে সচুম্বন আলিঙ্গন করিলে, যুবক-যুবতীর অনুরাগ সেই সেই ভাবে সংযুক্ত হইয়া বর্ধিত হইতে থাকে। (ইহাও আচার্যের স্বভাবোক্তি)। এই পর্যন্তই রতারম্ভিকাবসানিকপ্রকরণ জানিবে।।’৩।।

আরম্ভ ও অবসানকালীন ব্যাপার রতের অবয়ব বলিয়া, তাহার গ্রহণে যেমন রত অবস্থাত্রয়সম্পন্ন, (আরব্ধরত, মধ্যরত, অবসন্নরত) সেইরূপ স্বাভাবিকাদি রাগভেদেও রত নানা আকারের হইয়া থাকে। তাহাই বলিতেছেন—

রাগবিশিষ্ট (স্বাভাবিক) আহার্য, কৃত্রিম, ব্যবহিতরাগ (দর্পজ) শাঠ্যজ এবং বিশ্বাসজ; এই কয়টি রতবিশেষ।।’৪।।

প্রথম দর্শন হইতেই নয়নপ্রীতিবশে প্রবৃদ্ধরাগ নায়ক-নায়িকার দূতসম্প্রষণাদি দ্বারা সমাগম হইলে যে রত হয়, প্রবাসপ্রত্যাগমনে বা প্রণয়কালে বিয়োগের পর যোগ হইলে, যে রত হয়, তাহাকে রাগবৎ বা অতিশয় রাগবিশিষ্ট বলা হয়।।’৫।।

সেখানে নিজের অভিপ্রায়ানুসারে রতি পর্যন্ত প্রবৃত্তি হইয়া থাকে।।’৬।।

কেবল নয়নপ্রীতিবশে অনুরক্ত নায়ক-নায়িকার আরম্ভকবিধানানুসারে রতারম্ব হইলে যে অনুরাগ অন্যে সংক্রান্ত হয়, তাহাকে আহার্যরাগ বলা যায়।।’৭।।

নিজের ইষ্টসিদ্ধি বা অনিষ্ট পরিহারার্থ কিংবা স্ত্রী অন্যপুরুষে বা পুরুষ অন্যস্ত্রীতে অথবা স্ত্রী ও পুরুষ, অন্য পুরুষ ও স্ত্রীতে মনে মনে আসক্ত আছে, সেরূপ স্থলে নায়ক বা নায়িকার স্বভাবানুগত চাতুঃষষ্টিক যোগের সাহায্যে রাগ প্রবর্তিত হয়। তদুভয়ের কার্যানুরোধেই রতের উৎপত্তি হয় বলিয়া সে রত কৃত্রিমনামে অভিহিত হয়।।’৮।।

সে স্থলে শাস্ত্রানুসারে সমুদায় যোগের প্রয়োগ করিতে চেষ্টা করিবে।।’৯।।

যেখানে পুরুষ, সম্প্রয়োগ হইতে রতি পর্যন্ত অন্য কোন প্রিয়তমাকে হৃদয়ে ধারণ করিয়া ব্যবহার করে; সুতরাং যেখানে তাহাকে ব্যবহিতরাগ নিশ্চয়ই বলিতে হইবে।।’১০।।

অধম কুম্ভদাসী বা পরিচারিকায় রতিপর্যন্ত যে সম্প্রয়োগ, তাহাকে পোটারত বলা যায়।।’১১।।

সেখানে আর উপচারের আদর করিবে না।।’১২।।
এই পোটারতকে দর্শজরাগ বলিয়া কথিত হইয়াছে।।১২।।

সেইরূপ গ্রামীনের সহিত রতিপর্যন্ত বেশ্যার যে সম্প্রয়োগ, তাহাকে খলরত বলে।।’১৩।।
প্রায়শ কার্যকাদিকে গ্রামীনশব্দে ব্যবহার করা যায়। তাহার সহিত বেশ্যার সম্প্রয়োগ গোপনকর—এই জন্য ইহার নাম খলরত।।১৩।।

সেইরূপ নাগরকের সহিত গ্রাম্যকামিনী, ব্রজযুবতী গোপবালা, প্রত্যন্তনারী, ব্যাধচণ্ডালপত্নী প্রভৃতির রতি পর্যন্ত সম্প্রয়োগকে খলরতই বলিতে হইবে।।’১৪।।
গ্রাম্যকামিনী—কার্যকাদিপত্মী। ইহাও অবশ্য দর্পজ; তথাপি গোপনকর বলিয়া পোটারত নহে, খলরত।।১৪।।

যদুভয়ের চিরকাল সম্প্রয়োগ হইতে থাকায় বিশ্বাস জন্মিয়াছে, তদুভয় নায়ক-নায়িকার যে পরস্পরের আনুকূল্যে সম্প্রয়োগ হয়, তাহাকে অযন্ত্রিতরত বলা যায়।।’১৫।।

স্ত্রীর আনুকূল্যে পুরুষ ও পুরুষের আনুকূল্যে স্ত্রী আরম্ভ ও পরিচালন করিবে; সেখানে যন্ত্রণ (নিয়ম) না থাকায় অযন্ত্রিতনাম হইতে পারে। ইহা বহুবিধ; কারণ, চিত্ররত হইতেও পারিবে।।১৫।।

চিত্ররত মধ্যে থাকিলেও ইহার বিষেষতে এই যে, ইওনুরাগের অনুসারে নাম হইয়াছে; সুতরাং রতবিশেষ এই পর্যন্ত।

এইক্ষণ প্রণয়কহল বলিব।।’১৬।।
যেমন বিশ্বস্ত নায়ক-নায়িকার অযন্ত্রিতরত হয়, সেইরূপ প্রণয়পূর্বক কলহের সৃষ্টিও করিতে পারা যায়; সুতরাং এক্ষণে প্রণয়কহলপ্রকরণ বলা যাইতেছে।।১৬।।

তন্মধ্যে প্রথমে কলহের কারণ বলা যাইতেছে—

প্রণয়ের বৃদ্ধির অনুসারে নায়িকা, বাক্যে সপত্নীর নামগ্রহণ, সপত্নীকে অবলম্বন করিয়া তাহার গুণসূচক আলাপ বা সেই নামে নায়িকাকে আহ্বান করা সহ্য করিবে না। তদ্ভিন্ন নায়িকার গৃহে গমনাদিক্রিয়া দ্বারা নায়কের বিপ্রিয়করণও সহিবে না।।’১৭।।

সপত্নীনামগ্রহণাদিকালে মহান্‌ কহল, রোদন, শরীরবেদনা—কম্পাদি, কেশকলাপের অবক্ষোদন (টানিয়া টানিয়া ছিঁড়িয়া ফেলা), নিজের কানে মুখে কপালে চপেটাঘাতকরণ, আসন বা শয়নীয় হইতে ভূমিতে যাইয়া পতন, মাল্য ও ভূষণাদির পরিত্যাগ এবং ভূমিতে যাইয়া শয়ন করা ইত্যাদি ব্যাপারের অনুষ্টান করিবে।।’১৮।।

নায়িকা তাদৃশ অনুষ্ঠান করিলে নায়ক যুক্তরূপ প্রিয়বাক্যে, বা পাদপতন দ্বারা অবিকৃতচিত্তে সেই ভূমিতে শয়ানা নায়িকার অনুনয় করিয়া এবং উত্থাপিত করিবার উপক্রম করিয়া শয়নে লইয়া যাইবার সম্যক্‌ চেষ্টা করিবে।।’১৯।।
প্রসন্নমনা—বিকার না দেখাইয়া; কারণ, তাৎকালিক বিকার ক্ষতে ক্ষারযোগসদৃশ। অনুনয় করিয়া, প্রসন্ন করিয়া। প্রসন্ন হও, ওঠ, শয়নে যাইয়া শয়ন কর—ইত্যাদি বাক্যে।।১৯।।

তাহার বাক্যে তৎকালোচিত উত্তরে খণ্ডিত করিয়া বারংবার অপরাধ স্মরণপূর্বক কোপ বাড়াইবে এবং কেশে ধরিয়া নায়কের মুখ উচ্চে তুলিয়া পাদ দ্বারা নায়িকার বাহুতে, বক্ষঃস্থলে এবং মস্তকে বা পৃষ্ঠে এক, দুই বা তিনবার অবঘাত করিবে। গৃহের দ্বারদেশে গমন করিবে। সেই স্থানে বসিয়া অশ্রুমোচন করিবে। অত্যন্ত ক্রুদ্ধ হইয়াও দ্বারদেশের বাইরে গমন করিবে না; কারণ, তাহাতে নায়ক ভাবিতে পারে যে নায়িকা গোপচ্ছলে অন্যের নিকট যাইয়াছে। সেইটি অত্যন্ত দোষের বিষয়। দত্তক এই কথা বলেন। সেই দ্বারদেশে যাইয়া পদাঘাত খাইয়া নায়ক বুঝিবে কোপের অবসান হইয়া আসিয়াছে; সুতরাং তখন যুক্তিপূর্বক নায়িকা অনুনীয়মানা হইলে প্রসন্ন হইবার চেষ্টা করিবে। প্রসন্না হইয়াও সকলুষ সাসূয় বাক্যে নায়ককে ব্যথিত করিবার চেষ্টা করিয়াই যেন প্রসন্নতাপূর্বক রতির আকাঙ্খাকারিণী হয় এবং নায়ককর্তৃক আলিঙ্গিত হয়।।’২০।।
ইহা কুলযুবতী ও পুনর্ভুর পক্ষে বিহিত।।২০।।

বেশ্যা এবং পরপরিগৃহীতার পক্ষে বিধান করা যাইতেছে—

নিজের ভবনে থাকিয়া পূর্বোক্তনিমিত্তবশে কলহ সংপ্রান্ত হইলে, সেইরূপ চেষ্টা করিয়া নায়কের নিকট যাইবে। সেই কোপানুষ্ঠানে পীঠমর্দ, বিট ও বিদূষক, নায়ক কর্তৃক প্রযুক্ত হইয়া কোপের উপশম করিবে। তাহারা অনুনয়াদি দ্বারা কোপের উপশম করিলে, তাহাদিগের সহিতই নায়কের ভবনে যাইবে এবং সেখানে সে রাত্রি বাস করিবে। ইহা প্রণয়কলহ নামে খ্যাত।।’২১।।
বহিঃস্ত্রীতে পাদপতন নিষিদ্ধ; সুতরাং তাহাদিগের পাদতলে নায়ক নিজগৌরবের অঞ্জলিপ্রদান করিবে না।।২১।।

সাম্প্রয়োগিক অধিকরণের বিষয় উপসংহার করিতেছেন—

এ বিষয়ে কতকগুলি শ্লোক আছে।
এইরূপে বাভ্রব্যকীর্তিত এই চতুঃষষ্টিকলা বরস্ত্রীতে প্রয়োগ করিলে নায়ক সিদ্ধিলাভ করিতে পারে।।’২২।।

বিদ্বৎসভায় অন্যশাস্ত্রের আলোচনা করিলেও যে ব্যক্তি এই চতুঃষষ্টি কলার (আলিঙ্গনাদি) বিষয়ে সবিশেষ ভাবে নিতান্ত অনভিজ্জ, সে ব্যক্তি অর্থত ও প্রয়োগত ত্রিবর্গপ্রতিপত্তি বিষয়ক কথায় অন্যন্ত পূজিত হয় না।।’২৩।।

কোনও ব্যক্তি অন্যবিজ্ঞানবর্জিত হইলেও যদি এই বিদ্যায় অলঙ্কৃত হয়, তবে সে নরনারীর গোষ্ঠীতে কামসূত্রের কথায় অগ্রণী হইতে পারে।।’২৪।।

এই পূজনীয়া বিদ্যার পূজা বিদ্বদ্‌গণ, খলব্যক্তি এবং গণিকাগণও করিয়া থাকে। পূজনীয়া আদন্দদায়নী বিদ্যার পূজা কে না করে?’২৫।।

আচার্যগণ শাস্ত্রে এই বিধ্যার নামনির্বাচনকালে এই সকল নামকরণ করিয়াছিলেন—নন্দিনী, সুভগা, সিদ্ধা, সুভগঙ্করণী এবং নারীপ্রিয়া।।’২৬।।

সে ব্যক্তি চতুঃষষ্টিবিদ্যায় বিচক্ষণ, তাহাকে বহুমানপুরঃসর অনুরাগবশে কন্যাগণ, পরকামিনীগণ এবং গণিকাগণ অবলোকন করিয়া থাকে।।’২৭।।

 

ইতি শ্রীমদ্‌-বাৎস্যায়নীয়কামসূত্রে সাম্প্রয়োগিকনামক ষষ্ঠ-অধিকরণে রতারম্ভাবসানিক রতবিশেষ এবং প্রণয়কহলনামক দশম অধ্যায় সমাপ্ত হইল।।১০।।

সাম্প্রয়োগিকনামক ষষ্ঠ-অধিকরণও সমাপ্ত।।৬।।



Post a Comment

Previous Post Next Post

POST ADS1

POST ADS 2