৪.৩ অর্থাগমোপায়াঃ, বিরক্তিলিঙ্গানি, বিরক্তপ্রতিপত্তিঃ ও নিষ্কাসনক্রমাঃ (অর্থোপার্জন)

চতুর্থ ভাগ – তৃতীয় অধ্যায়

এইভাবে অনুবর্ত্তিত কান্তের নিকট হইতে ধন গ্রহণ করিবে। তাহাও উপায়ানুসারে গ্রহণ করিবে, অনুপায়ে নহে; ইহা কথিত হইয়াছে। সম্প্রতি অর্থাগমোপায়নামক প্রকরণের আরম্ভ করা যাইতেছে।–সেই গ্রহণ দ্বিবিধ; স্বাভাবিক ও অস্বাভাবিক। এ সম্বন্ধে কিছু বলা যাইতেছে—

পূর্বে যে সক্ত ব্যক্তির লক্ষণ বলা হইয়াছে, তাহার নিকট হইতে স্বাভাবিকভাবে ধন গ্রহণ করিবে। আর যে সক্ত নয়, তাহার নিকট হইতে প্রাযত্নিকভাবে ধন গ্রহণ করিবে। আচার্যগণ বলেন—তন্মধ্যে স্বাভাবিক বা সঙ্কল্প হইতে সমধিক ধন লাভ করিতে পারিলে, আর উপায় প্রয়োগ করিবে না। বাৎস্যায়ন বলেন—স্বাভাবিকই হউই, আর প্রাযত্নিকই হউক, সঙ্কল্পিতই হউই, আর অসঙ্কল্পিতই হউই, যদি উপায় পরিষ্কৃত হয়—অর্থাৎ উপায়ের সহিত স্বভাব ও প্রযত্ন মিলিত হইয়া অর্থাগমের জন্য প্রযুক্ত হয়, তবে দ্বিগুণ ধনই দিবে।।’১।।

যে উপায় অবলম্বন করিয়া ধনগ্রহণ করিলেও অর্থলোলুপতা প্রকাশ পাইবে না, সেই সকল উপায় প্রদর্শন করা যাইতেছে—
অলঙ্কার, লাড্ডুকাদি ভক্ষ্য, অন্নাদি ভোজ্য, পেয় সুরাদি, বস্ত্র চতুর্বিধ, ত্বগ্‌জ, ফলজ, কৃমিজ ও লোমজ; গন্ধ কুঙ্কুমাদি, মাল্য, তাম্বুল, সুপারি, পশু ও ভাণ্ডোপকরণ আদি দ্রব্যের বিক্রেতাদিগের নিকটে তাহার পরিশোধার্থ কোনও একটি কালের নিয়ম শুনাইলে মূল্য প্রতিদান করাইবে। তাহার সমক্ষে তাহার ধনের প্রশংসা করিবে। ব্রত, বৃক্ষপ্রতিষ্ঠা, উদ্যান, দেবগৃহারাম্ভ ও প্রতিষ্ঠা, তড়াগ, উদ্যানোৎসব ও প্রীতিদায়ের ছল করিবে। তাহার অভিগমনার্থ আগমন করায় দণ্ডপাশিকরক্ষিগণ ও চৌরকর্তৃক ধৃত হওয়ায় অলঙ্কার হারাইয়াছে—বলিবে। গৃহদাহ, কুড্যচ্ছেদ (সিঁদ কাটা) বা মাতার অসাবধানতায় গৃহ হইতেই অর্থনাশের কথা বলিবে। প্রার্থনা করিয়া আনা ও নায়কদত্ত অলঙ্কারের নায়কের অভিগমনার্থ আমোদ-প্রমোদের ব্যয় করার জন্য ব্যয় করা হইয়াছে, ইহা চার (দূত) দ্বারা জানাইবে। নায়কের জন্য ঋণ গ্রহণ করিবে। নায়কের ব্যয় জন্য জননীর সহিত বিবাদ বাধাইবে। কোনও সুহৃদের বাটিতে উৎসবাদি উপস্থিত হইলে, উপহার দিবার যোগ্যতা নাই বলিয়া যাইতে না চাওয়া। পূর্বেই যেন শুনাইয়া রাখে যে, তাহারা আমার বাটিতে যখন উৎসব হইয়াছিল, তখন প্রচুর পরিমাণে উপহার লইয়া আসিয়াছিল; সুতরাং আমি এখন কি রিক্তহস্তে যাইতে পারি?—ইহা বলিবে। তাহা হইলে নিশ্চয় দিবে। যদি না দেয়, তবে অবশ্যই যাইবে না। উচিত-ক্রিয়ার, অর্থাৎ শরীর রক্ষার্থ প্রাত্যহিক ব্যয়ের সংক্ষেপ করিবে এবং তাহা শুনাইবে। তাহা শুনিলে নিশ্চয়ই দিবে। নায়কের জন্য শিল্পীর নিকট কোনও কার্যের আদেশ করিবে। আর বলিবে, এ শিল্পী কার্য অতি সুচারু করে, কিন্তু অধিক (কারণক) পারিশ্রমিক বা বাণী লাইয়া থাকে। আমার ত সে যোগ্যতা নাই, তবে তুমি যদি দাও, তাহা হইলে আমি তোমার এইটি করাইয়া দিই। তুমি না দিলে যে কোন উপায়েই হউক, আমি নিশ্চয় করাইয়া দিব। তাহাতে আমার কাছে সে আরও অধিক লইবে। তা কি করিব, ইত্যাদি বলিবে! কার্যোদ্ধারের জন্য বৈদ্য ও মহামাত্রের উপকার করিবে। তাহারা ঔষধের ছলে এবং বলপূর্বকও ধনদান করিতে অস্বীকৃত হইলেও দেওয়াইবে। নায়কের সম্বন্ধীয় উপকারে মিত্রগণের পীড়াদি ব্যসন উপস্থিত হইলে যথাসাধ্য সাহায্য করিবে। তাহারা পীড়াদি ব্যসনে উপকৃত হইয়া, সময়ে বলিয়া নায়ক দ্বারা ধন দেওয়াইবে। কোনও গৃহকর্ম, অর্থাৎ ছাদন বা ইষ্টকাদি করাইবে। সখীর পুত্রের ও নিজের পুত্রের উৎসঞ্জন, অর্থাৎ অলঙ্কারাদি দ্বারা ভূষণ ও আচ্ছাদনাদি করাইবে। যেমন অন্নপ্রাশনেরকালে বা চূড়াকরণাদিকালে তদুপযুক্ত ব্যয় করাইতে সচেষ্ট হইবে, অথবা সখীর অভিলাষ বা ব্যাধি প্রতিকর্তব্য বুঝাইবে। কিংবা মিত্রের দুঃখাপনয়ন কারয়িতব্য, ইত্যাদি গৃহকর্মের ছল করিয়া ব্যয়ের উপদেশ করিবে। নায়কের জন্য নিজের কোনও একটি অলঙ্কারের এক টুকরা বিক্রয়, নায়কের সমক্ষেই করিবে। নায়ক যে অলঙ্কার বা ভাণ্ডোপকরণ (ঘটি বাটি ইত্যাদি) দিয়াছে, সেই সকল নায়কের সমক্ষে কৃতসঙ্কেত (যাহার সহিত পূর্বে বলিয়া স্থির করা আছে) বণিকের নিকট ব্যয়ার্থ বিক্রয়ের জন্য দেখাইবে। একটি-আধটি বা বিক্রয়ই করিবে। কোনও কার্যোপলক্ষে অন্য বেশ্যার বাটি হইতে আনীত দ্রব্যের অন্যদ্রব্যের সহিত পরিবর্তিত হইয়া যাইলে, তাহা লইয়া একটু বেশ গণ্ডগোল পাকাইয়া নায়কের সমক্ষে যাওয়া ও তাহার প্রতিশিষ্ট দ্রব্যের জন্য নায়ককে ধরা। পূর্বোপকারের বিস্ম্রণ না হওয়া এবং সেই প্রসঙ্গে তাহার অনুকীর্তন করা। চারদ্বারা অন্যান্য প্রতিযোগিনী গণিকাদিগণের লাভাতিশয় শ্রবণ করাইবে। তাহাদিগের নিকট নায়কের সমক্ষে নিজের অত্যন্ত অধিক লাভ যাহা হইয়াছে ও হইবার অসম্ভব নাই এবং সম্ভব হইয়াছে, তাহা লজ্জাসহকারে বর্ণনা করিবে। কোনও ব্যক্তিরা নায়কের নিকট পূর্বে প্রচুর পাইয়াছিল, আবার তাহারা সেই আশায় নায়ককে চাপিয়া ধরিলে প্রকাশ্যভাবে তাহাদিগকে নিষেধ করিবে। নায়ককে অবলম্বন করিয়া যাহার স্পর্ধা করে, সেই সকল ত্যাগশীল লোকের নিদর্শন, অর্থাৎ দৃষ্টান্ত প্রদান করিবে। বালককে চালিত করিয়া (টোয়াইয়া) দিয়া ‘তুমি আর আসিবে না; আমাকে দিয়া যাও।’ এই বলিয়া প্রার্থনা করাইবে এবং লজ্জা পরিত্যাগ করিয়া নিজেই বা প্রার্থনা করিবে।।’২।।
দেশ, কাল ও অবস্থার প্রতি দৃষ্টি রাখিয়া এই প্রয়োগের ব্যবহার করিবে।।২।।

ইতি অর্থোগমোপায়নামক প্রকরণ।

অথ বিরক্তপ্রতিপত্তিনামক প্রকরণ।

উপায়ানুসারে সক্তের নিকট হইতে ধনগ্রহণ করিবে। ইহা কথিত হইল; কিন্তু যে বিরক্ত, তাহার নিকট হইতে কিরূপে ধনগ্রহণ করিবে, তাহা নির্ণয় করার জন্য এখন বিরক্তপ্রতিপত্তিনামক প্রকরণ আরম্ভ করা যাইতেছে। বিরক্তির লক্ষণ কি?
স্বভাবের বিকার উপলব্ধি করিয়া এবং মুখের বর্ণবৈকৃতি দ্বারা সে যে নিশ্চয় বিরক্ত, তাহা বেশ জানিতে পারিবে।।’৩।।

স্বভাবের অন্যথাবৃত্তি কি প্রকার; তাহা বলা যাইতেছে—
যাহা দেওয়া উচিত, তদপেক্ষা অল্প ও অতিরিক্ত দেয়। নায়িকার বিপক্ষগণের সহিত প্রীতি করে। একটি বিষয়ের ছলে অন্যবিষয়ের অনুষ্ঠান করে। প্রত্যহ দীয়মান ধন দেয় না। ইহা দিব বলিয়া প্রতিজ্ঞাত বিষয়ের প্রার্থনা করিলে বিস্মৃত হয়। অথবা অস্বীকার করে, ‘আমি ত ইহা দিব বলিয়া স্বীকার করি নাই’ বলে। মিত্রাদির সহিত সঙ্কেত কথোপকথন করে। মিত্রকার্যের ছলে অন্য নায়িকার স্থানে যাইয়া শয়ন করে। পূর্বসংসৃষ্ট নায়িকার পরিজনবর্গের সহিত নির্জনে কথোকথন করে। তাহাকে বিরক্ত বলিয়া জানিবে।।’৪।।

বিরক্তের পরিচয় হইলে, তাহার পক্ষে অনুষ্ঠান কি, তাহা বলা হইতেছে—
নায়ক যতদিন জানিতে না পারে যে, আমি ইহার উপর বিরক্ত, ইহা এ নায়িকা জানিয়ে পারিয়াছে; তন্মধ্যে কোনও একটা ছল করিয়া নায়কের কোনও একটা ভাল দ্রব্য হস্তগত করিবে। পরে কৃতসঙ্কেত উত্তমর্ণ (যাহার নিকট পূর্বে বলিয়া স্থির করা হইয়াছে, তাদৃশ ঋণদাতা) সেই দ্রব্যটি বা দ্রব্যগুলি নায়কের হস্ত হইতে বলপূর্বক গ্রহণ করিয়া লইয়া যাইবে। যখন উত্তমর্ণ সেই দ্রব্য লইয়া যাইবে, তখন অবশ্যই নায়ক তাহার সহিত বিবাদ করিতে উপস্থিত হইবে। বিবাদ করিলে প্রাড়্‌বিবাকের (হাকিমের) স্থলে উপস্থিত করিয়া ব্যবহারশাস্ত্রের (আইনের) অধীন করাইবে। যদি বিবাদ নাই করে, তবে কার্যসিদ্ধিই হইল।।’৫।।

ইতি বিরক্তপ্রতিপত্তিনামক প্রকরণ।

অথ নিষ্কাসনক্রম প্রকরণ।

বিরক্ত ব্যক্তি আপনা হইতেই নিষ্কাসিত হয়; সুতরাং তাহার নিষ্কাসন করিবার কোনও প্রয়োজন নাই; কিন্তু যে সক্ত স্বয়ং নিষ্কাসিত হয় না, তাহার নিষ্কাসনক্রম বলা যাইতেছে—

সক্ত যদ্যপি পূর্বে বহু উপকার করিয়া থাকে, তথাপি বর্তমানে অল্প দান করে বলিয়া মিথ্যাপরাধে অপরাধী করিবার চেষ্টা করিবে। অর্থাৎ পূর্বে বহু উপকার করিলেও সম্প্রতি অল্প ফল লাভ হয় বলিয়া আর যদি অন্য নায়িকাকে সে কামনা করিতে থাকে, তবে তাহাকে সরাইয়া দিবার জন্য নানারূপ ষড়যন্ত্র করিবে, যাহাতে সে নিজেকে তথায় অনুপস্থেয় (আসিবার অযোগ্য) বলিয়া মনে করে। আর যদি অসার, অর্থাৎ দ্রব্যহীন হইয়া পড়ে, তাহার নিকট আর কিছুই লাভের আশা না থাকে, তবে তাহাকে বলিয়াই নিষ্কাসিত করিবে। যখন তাহাকে নিষ্কাসিত করিবে, তখন অবশ্য আর একজনকে অবলম্বন করিয়া, তবে তাহাকে নিষ্কাসিত করিতে প্রবৃত্ত হইবে।।’৬।।

নিষ্কাসনের উপায় প্রকাশ্যভাবে ও গুপ্তভাবে অবলম্বন করিবে। তন্মধ্যে প্রকাশ্যভাবের উপায় বলা যাইতেছে—

নায়কের অনিষ্টকর বিষয়ের সেবা করিবে। নিন্দিত যে তৃণচ্ছেদন ও লোষ্ট্র মর্দনাদি) নখদ্বারা তৃণচ্ছেদন ও অঙ্গুল মটকান ইত্যাদি), তাহার বারংবার কারণ; অবশ্য তাহার সমক্ষেই করিবে। তাহাকে দেখিয়াই নিজের ওষ্ঠ কামড়াইয়া ভয়মুদ্রা দর্শন করাইবে। ভুমিতে পদাঘাত করিবে। নায়ক যাহার বিন্দুবিসর্গ না জানে, তাদৃশ লজ্জাকর বিষয় অবলম্বন করিয়া লোকমধ্যে গল্প করিবে। যাহা জানে, তাহাতে বিস্ময় প্রকাশ না করা ও কুৎসা করার চেষ্টা করিবে। অন্যকে উৎসাহিত করিয়া তাহার সর্বনাশ করিয়া দিবে। অধিক লোকের সহিত থাকিবে। কোনও বিষয়ের অপেক্ষা করিবে না। দোষ সমান হইলেও নিন্দা করিবে। নির্জনে অবস্থান করিবে।।’৭।।

যদিই বা কদাচিৎ রতব্যাপারে লিপ্ত হয়, তবে কি প্রকারের আচরণ করিবে, তাহা বলা যাইতেছে—
রতের জন্য সরকতাম্বুলাদি উপচার প্রদান করিতে যাইতে উদ্বেগ প্রকাশ করিবে। চুম্বন করিতে উদ্যত হইলে মুখদান করিবে না। জঘনরক্ষার চেষ্টা করিবে। নখদশনক্ষতের সহন করিবে না। আলিঙ্গন করিতে উদ্যত আলিঙ্গন করিতে উদ্যত হইলে, ভুজময়ী সূচী দ্বারা ব্যবধান করিবে। গাত্রের স্তব্ধতা করিবে, যাহাতে আকর্ষণ করিতে না পারে। যন্ত্রযোগ নিবারনার্থ ঊরুদ্বয় দৃঢ়রূপে ব্যত্যস্ত করিবে (পায়ে পায়ে আঁকুড়ী দিয়ে)। অতিরিক্ত নিদ্রাপর হইবে। যখন দেখিবে অন্যন্ত শ্রান্ত হইয়াছে, তখনই প্রেরণ করিবে, বলিবে ‘আইস এখন দেখি।’ না সমর্থ হইলে উপহাস করিবে ‘এতই বীরের ক্ষমতা।’ সমর্থ হইলে অভিনন্দন করিবে না। দিনের বেলাও। এমনও কোন কামগর্দভ আছ, যে দিনেও মদবিহ্বল হইয়া রমণে প্রবৃত্ত হইয়া থাকে। ভাবে উৎকণ্ঠা লক্ষ্য করিয়া কোনও মহাজনের (উৎকৃষ্টজনের) অভিগমন করিবে। তাহাতে তাহার (কামোৎকণ্ঠিত নায়কের) ইচ্ছা ব্যাহত হইবে।।’৮।।
সঙ্কথার অধিকার করিয়া কথিত হইতেছে—
কথা বলিলেই ছল গ্রহণ করিবে। ক্রীড়া না করিলেও কথার উপর অকারণ উপহাস করিবে। ক্রীড়া আরব্ধ হইলে নায়ক কথা বলিতে থাকিলে হাস্য করিবে, কিন্তু অন্যান্য বিষয়ে ছল করিয়া বা পরিজনকে কটাক্ষ দ্বারা প্রেক্ষণ করিবে এবং সেই প্রসঙ্গে হস্ত দ্বারা তাড়ন করিবে। মারিয়া নায়কের কথা উপেক্ষা করিয়া অন্য কথা বলিবে। নায়কের অপরাধ ও দ্যুতাদির অনুষ্ঠান নিতান্তই যে অপরিহার্য, তাহা বারংবার কীর্তন করিবে। মর্মস্পর্শী যে সকল বিষয়, তাহার কীর্তন চেড়ী দ্বারা করাইবে। যখন যখন আসিবে, তখন তখন নিজের দর্শন দিবে না। যাহা যাঞ্চা করিবার নহে, তাহারই প্রার্থনা করিবে। তাহাতে যদি পরিত্যাগ না করে, তবে নিজেই পরিত্যাগ করিবে।।’৯।।

বেশ্যা কর্তৃক গম্যের যে পরিগ্রহ, তাহার বিধান এইমাত্র দত্তক বলিয়াছেন। আমি বলিলাম নহে। তিনি গণিকার নিয়োগে সংক্ষেপে বলিবার জন্য ইচ্ছা করিয়া শাস্ত্র সংগ্রহ করিয়াছিলেন।
এই বিষয়ে শ্লোক আছে—
পরীক্ষা করিয়া গম্যের সহিত সংযোগ করিবে। সংযোগ হইলে তাহার অনুরঞ্জন করিবে। অনুরক্ত হইলে তাহার নিকটে অর্থগ্রহণ করিবে। যখন অর্থ নিঃশেষিত হইবে, তখন তাহাকে পরিত্যাগ করিবে। এইরূপে এই কল্পের অবলম্বন করিলে বেশ্যা নায়কপরিগ্রহে অবস্থান করিয়া গম্যের সহিত অতিরিক্ত সম্বন্ধ করিবে না ও প্রচুর ধনোপার্জন করিতে সমর্থ হইবে।।’১০।।

ইতি নিষ্কাসনক্রমনামক প্রকরণ।
ইতি শ্রীমদ্‌বাৎস্যায়নীয়কামসূত্রে ধৈশিকনামক চতুর্থ অধিকারণে অর্থাগমোপায়, বিরক্তলিঙ্গ, বিরক্তপ্রতিপত্তি ও নিষ্কাসনক্রমনামক তৃতীয় অধ্যায়।।৩।।



Post a Comment

Previous Post Next Post

POST ADS1

POST ADS 2