পঞ্চম ভাগ – পঞ্চম অধ্যায়
অতুল বিভরের
ঈশ্বর যাহারা, তাহাদিগের
অবশ্য পরগৃহে প্রবেশ হইতে
পারে না বলিয়া, তাহাদিগের
কামিতও না হইবার সম্ভবনা;
সুতরাং এখন সে
সম্বন্ধে কিছু বলিবার আবশ্যক
উপস্থিত হইয়াছে :–
‘রাজা
বা মহামাত্রগণের পরভবনে প্রবেশ
নাই, কারণ
ইহাদিগের আচার-ব্যবহার
তাঁহারাই দেখিবেন; সুতরাং
তাঁহাদিগের সর্ব্বদাই বিশুদ্ধ
থাকা আবশ্যক। আরও মহাজনেরা
যে আচরণ প্রদর্শন করিবেন,
অন্য ব্যক্তিগণও
সেইপ্রকার আচরণের অনুকরণ
করিয়া থাকে, ইহাই
প্রসিদ্ধ।।’১।।
দৃষ্টান্তদ্বারা
তাহার দৃঢ়তা সম্পাদন
করিতেছেন—
‘সূর্যদেব
উদিত হইতেছেন, ইহা
লোকত্রয় দেখিতে থাকে ও সেই
সঙ্গে সঙ্গে তাহারাও জাগরিত
হয়। আবার তিনি দেশদেশান্তরে
যাইতেছেন দেখিয়া, সকলে
স্ব স্ব কার্যে প্রবর্তিত
হয়।।’২।।
–সাধারণ
লোকে মহানুভবের চরিতানুবিধান
করিয়া থাকে। অতএব রাজা বা
মহামাত্রগণের পরভবনে অসদভিপ্রায়ে
নিশ্চয়ই প্রবেশ নিষিদ্ধ হওয়া
উচিত।।২।।
‘অতএব পরগৃহ প্রবেশ করিয়া যে পারদারাভিগমন, তাহা তাঁহাদিগের পক্ষে অযোগ্য—নিন্দনীয় ব্যাপার; সুতরাং তাঁহারা বৃথা আচরণ করিবেন না।।’৩।।
‘যদি একান্তই আচরণ না করিলে চলে না, এমনই হয়, তবে প্রয়োগ অনুষ্ঠান করিতে পারে।।’৪।।
প্রয়োগ
দ্বিবিধ—প্রচ্ছন্ন ও প্রকাশ্য।
ঈশ্বরও দ্বিবিধ—ক্ষুদ্র ও
মুখ্য। তন্মধ্যে ক্ষুদ্রেশ্বরের
কর্তব্য অধিকার করিয়া কিছু
বলা যাইতেছে :–
‘যুবক
গ্রামাধিপতি, বা
গ্রামশাসনের জন্য অধিকৃত
যুবক, অথবা
গ্রামকূটের (হালের
মহাজনের) যুবক
পুত্রের পক্ষে তত্তৎগ্রামবাসী
প্রজার স্ত্রীগণ বচনে সিদ্ধ
হয়। বিট (কামুকগণ)
তাহাদিগের
চর্ষণী বলিয়া অভিধান করে।।’৫।।
‘সেইসকল চর্ষণীগণের সহিত এই এই উপায়ে সম্বন্ধ হইয়া সম্প্রয়োগ হইতে পারে। পেষণ, কুট্টন ও রন্ধনাদির জন্য নিয়োগ করিয়া, (ইহাকে বিষ্টিকর্ম্ম বলে), কোষ্ঠাগারের কর্ম করিতে প্রবিষ্ট করিয়া কোষ্ঠাগার হইতে ধান্য প্রভৃতি দ্রব্যের নিষ্ক্রমণ ও প্রবেশন করিতে নিয়োগ করিয়া, গৃহসজ্জা করিবার জন্য নিযুক্ত করিয়া, বীজের রক্ষণ, উৎপাটন ও গদীকরণ (যাহার উপর বীজকে রোপন করিয়া অঙ্কুরিত করা হয়; চারা দেওয়া) আদি ক্ষেত্রকর্মে প্রেরিত করিয়া, কার্পাস, উর্ণা, অতসী, শণ, পট্টবল্কাদির সূত্রকর্তনের জন্য ভাণ্ডাগার হইতে দান করিতে যাওয়া, কর্তিত সূত্রের প্রতিগ্রহণ করিতে যাইয়া এবং ধান্যাদিদ্রব্যের ক্রয়, বিক্রয় ও বিনিময়াদি করিতে যাইয়া, সেই সেই কর্মের কালে অনায়াসে সম্প্রয়োগ হইতে পারে।।’৬।।
‘সেইরূপ
ব্রজনারীগণের সহিত গবাধ্যক্ষের
অনায়াসে দধিমথনাদি ক্রিয়োপলক্ষে
সম্প্রয়োগ হইতে পারে।।’৭।।
ব্রজনারী—গোপী।
‘বিধবা, অনাথা ও প্রব্রজিতাদি (ভিক্ষুক্যাদি) কামিনীদিগের সহিত সূত্রাধ্যক্ষের (যে সূতার অধ্যক্ষ) অনায়াসে সম্প্রয়োগ সম্পন্ন হইতে পারে।।’৮।।
‘নগরে নিযুক্ত দণ্ডধারী ও পাশধারী নাগরগণ স্ত্রীমর্মজ্ঞ হইলে, রাত্রে অটনকালে পরিভ্রমণকারীণী কামিনীগণের সম্প্রয়োগ লাভ করিতে বিনা আয়াসে সমর্থ হয়।।’৯।।
‘রাজকীয় পণ্য ক্রয় ও বিক্রয় করিতে নিযুক্ত যে পণ্যাক্ষ্যধ, সে ক্রেত্রী ও বিক্রেত্রী কামিনীর উপভোগ করিতে পারে।।’১০।।
‘অষ্টমীচন্দ্র (অগ্রহায়ণ মাসে), কৌমুদী (কোজাগর) ও সুবসন্তকাদিকালে নগর, পত্তন, খর্বট ও দ্রোণমুখের (১) সুন্দরীদিগের ঈশ্বরভবনে অন্তঃপুরিকাদিগের সহিত প্রায়শই ক্রীড়া হইয়া থাকে।।’১১।।
‘সেই ক্রীড়াকালে অন্তঃপুরকামিনীদিগের সহিত পেয়পান করিয়া নগর-স্ত্রীগণ (অর্থাৎ আগত নগর-স্ত্রীগণ) যাহার সহিত যেমন পরিচয়, তাহারা অন্তঃপুরিকাগণের পৃথক্ পৃথক্ গৃহে যাইয়া নানাপ্রকার গল্পের সহায়তায় কিছুকাল অবস্থান করিবে। তারপর অন্তঃপুরিকাগণের নিকট তাম্বুলাদি-পূজা পাইয়া আবারও পানাদি করিবে। (অবশ্য কর্তাই এইরূপ করাইবেন)। পরে যখন দিন অতিবাহিত হইবে, সন্ধ্যাসমাগম হইবে, সেই সময়ে রাজভবন হইতে নিষ্ক্রামিত করিবে।।’১২।।
‘সেই সময়ে রাজার প্রেরিতা একটি দাসী প্রযোজ্যের (যাহার সম্প্রয়োগ কামনীয়) পূর্বপরিচিতা বলিয়া পূর্বসংকেতানুসারে তাহাকে সেই রাজভবনে সম্ভাষণ করিবে এবং রামণীয়ক পদার্থসকল দেখাইয়া চিত্তহরণ করিবে। অবশ্য পূর্বের বলিয়া রাখিবে যে, অমুক ক্রীড়ায় তোমাকে রাজবাটীর সমস্ত স্থান ও রামণীয়ক সমুদায় দেখাইব। পরে উপযুক্ত কালে সেইরূপই করাইবে। তারপর, বলিবে—আইস, বাহিরে প্রবালকুট্টিম (রত্নের খনি) তোমাকে দেখাইব। এই বলিয়া মণিভূমিকা, বৃক্ষবাটিকা, দ্রাক্ষামণ্ডপ, সমুদ্রগৃহ (জলের মধ্যে কাচ দ্বারা নির্মিত গৃহ), প্রাসাদ (যাহার মধ্যে যাইতে হইলে অত্যন্ত গূঢ় ভিত্তি দিয়া যাইতে হয় ও নিষ্ক্রান্ত হইতে হয়), চিত্রকর্মসকল, ক্রীড়ামৃগসকল, সজীব যন্ত্র ও নির্জীব যন্ত্র, আর যাহা কেবল বায়ুবেগে চালিত হয় এবং কিরণসাহায্যে চালিত হয়, তদ্ভিন্ন অন্যান্য যন্ত্রও যাহা অত্যন্ত কৌতুহলকর, হংস গৃহপালিত অন্যান্য পক্ষীসকল এবং ব্যাঘ্র ও সিংহের পিঞ্জরাদিসকল ইত্যাদি যাহা পরে বর্ণিত হইবে, সেসকল দেখাইবে ও একান্তে বসিয়া মধ্যে মধ্যে তাহার উপর ঈশ্বরের অনুরাগ অতীব প্রবল, ইহা শুনাইবে। সম্প্রয়োগ বিষয়ে ঈশ্বরের প্রচুর চাতুর্য আছে, ইহা বিশদভাবে বর্ণিত করিবে। কেবল মন্ত্র শোনাইবার ন্যায় শোনাইবে না, তাহাতে ঈশ্বরের প্রতিপন্ন হয়, তাহা করিয়া ঈশ্বরের নিকট যোগাইয়া দিবে।।’১৩।।
‘যদি তাহাতে নায়িকা ঈশ্বরের প্রতিপন্ন না হয়, তবে ঈশ্বর স্বয়ং আসিয়া উপচার দ্বারা সান্বিত করিয়া, রঞ্জিত বরিয়া, মিলিয়া অনুরাগের সহিত বিদায় দিবে। পরে প্রযোজ্যার সহিত উপর উচিত অনুগ্রহ করিয়া তাহার ঔচিত্যজ্ঞানের উদ্বোধ করাইয়া প্রত্যহই তাহার স্ত্রীকে অন্তঃপুরের মধ্যে প্রবেশ করাইবে। তারপর পূর্বের ন্যায় একটি দাসীকে পাঠাইয়া পূর্বের ন্যায় যাহা যাহা কর্তব্য, তাহা তাহা করাইবে। অথবা অন্তঃপুরস্ত্রীই প্রযোজ্যার সহিত চেটিকা পাঠাইয়া প্রীতি করিবে। তাহার পরে, পূজা করিয়া, পান করাইয়া, প্রণিহিত (প্রেরিত) দাসীদ্বারা পূর্বের ন্যায় সমস্তই সংসাধিত করিবে। অথবা যে বিজ্ঞানে প্রযোজ্যা অত্যন্ত বিখ্যাত, তাহাই দর্শন করাইবার জন্য সোপচারে প্রযোজ্যাকে রাজবাটিতে আহ্বান করিবে। তারপর, প্রণিহিতা রাজদাসী পূর্বের ন্যায় সমস্তই করিবে। অথবা যাহার পতির অত্যন্ত অনর্থ উপস্থিত হইয়াছে, সেই অনর্থে তাহার পতি অত্যন্ত ভীতও হইয়া পড়িয়াছে, সেই স্ত্রীকে ভিক্ষুকী বলিবে—(ভিক্ষুকী অবশ্য রাজার প্রণিহিতা হইবে)—রাজার অন্তঃপুরসুন্দরীদের মধ্যে অমুক স্ত্রীটি রাজার নিকট সিদ্ধা, রাজা তাহার কথা বড়ই শুনিয়া থাকেন। আর তাঁর স্বভাবই কৃপাময়। আমি কিন্তু এই উপায়ে তাঁহাকে তোমার সহিত পরিচয় করাইয়া দিতে পারি। যদি বল, তবে আমিই তোমায় রাজবাটিতে অনায়াসে প্রবেশ করাইয়া কার্য সিদ্ধ করিয়া দিতে পারি। আমি নিশ্চয়ই বলিতে পারি, তুমি তাঁহাকে ধরিলে ও আমি বলিলে, তিনি তোমার ভর্তার মহান্ অনর্থ নিবর্তিত করিয়া দিতে পারেন। এইরূপে রুচি জন্মাইয়া দুই-তিনবার প্রবেশ করাইবে। অন্তঃপুরিকাও তাহাকে অভয় দিবে। অভয় শুনিয়া সম্যক্রূপে প্রহৃষ্টা হইলে, রাজদাসী প্রণিহিত হইয়া তাহাকে সঙ্গে লইয়া পূর্বের ন্যায় সমস্ত দেখা-শুনা প্রভৃতি করাইবে। ইহাদ্বারা জীবিকার্থিজনের, প্রচণ্ডপ্রতাপশালী মহামাত্র দ্বারা অভিব্যাপন্ন জনের, রাজপুরুষকর্তৃক বলপূর্বক বিগৃহীত ব্যক্তির, ব্যবহারে ন্যায়বল না থাকায় দূর্বল ব্যক্তির, নিজের ভোগে নিতান্ত অসন্তুষ্টজনের, রাজার নিকটে প্রীতিকামনাকারীর, রাজপুরুষদিগের নিকট প্রসিদ্ধিকামীর, সজাত দয়াদগন কর্ত্তৃক বাধ্যমান পুরুষের, সজাত দায়াদগণকে বাধিত করিতে ইচ্ছুকের, সূচক ও অন্যান্য কার্যবশবর্ত্তী পুরুষদিগের জায়া রাজার পূর্বোক্ত-উপায়-সাধ্য বলিয়া ব্যাখাত হইল।।’১৪।।
‘অন্যের সহিত পূর্বে সংসৃষ্টা নায়িকা প্রযোজ্য হইলে, নাগরকবিধিদ্বারা তাহার সংগ্রহ করাইয়া, দাস্যবৃত্তি গ্রহণ করাইয়া তাহাকে ক্রমে অন্তঃপুরে প্রবেশ করাইবে। চারদ্বারা তাহার পরিণাম সম্পূর্ণরূপে দূষিত করিয়া ‘আমি ইহাকে আশ্রয় দিয়াছি রাজার নিকট আমি বিদ্বেষভাজন হইয়াছি; তথাপি যখন আশ্রয় দিয়াছি, তখন আর উহাকে নিরাশ্রয় করিয়া ছাড়িয়া দিতে পারি না’ এইরূপ প্রবন্ধদ্বারা স্ত্রীর পরিচারণাদি কর্মের জন্য যাহাতে নিয়োগ করিতে পারে, সেইরূপ করিয়া অন্তঃপুরে প্রবেশ করাইবে। ইতি প্রচ্ছন্নযোগ। এই যোগ প্রায়শঃ রাজপুত্রদিগের নিকটেই বিদিত হয়।।’১৫।।
‘কিন্তু প্রচ্ছন্ন হইয়াও ঈশ্বর পরভবনে প্রবেশ করিবে না।।’১৬।।
‘গুর্জ্জরাতে (গূজরাটে) কোট্টনামক একটি স্থান আছে। তাহার অধীশ্বর আভীরনামে প্রসিদ্ধ। তিনি শ্রেষ্ঠী বসুমিত্রের ভার্য্যার অভিগমন করিতে তাহার বাটীতে গিয়াছিলেন। পরে, বসুমিত্রের ভ্রাতা তাহা জানিতে পারিয়া, একটি রজককে নিযুক্ত করিয়া আভীরের প্রাণনাশ করিয়াছিল এবং কাশীরাজ জয়সেনকে অশ্বাধ্যক্ষ বিনাশ করিয়াছিল।।’১৭।।
‘ঈশ্বরের প্রকাশ্যভাবে অভিলাষ পূরণ করাই উচিত। তাহাও দেশের প্রবৃত্তি অনুসারে কর্তব্য।।’১৮।।
‘যে দেশে যাদৃশ সমাচার, পূর্বাচার্যগণ ব্যবস্থাপিত করিয়া রাখিয়া গিয়েছেন, সে দেশে সেই অনুসারেই আচার-ব্যবহার করা উচিত। তাহা হইলে ঈশ্বরের কামিত আচার সাধারণে অনুকৃত করিতে চেষ্টিত হইবে না; কারণ সে আচারে কেবল রাজারই অধিকার, অন্যের-ত আর অধিকার নাই।।’১৮।।
‘বিবাহিত
কন্যা দশমদিনে কিছু ঔপায়নিক
বস্ত্রাদি লইয়া অন্তঃপুরে
প্রবেশ করে ও রাজকর্তৃক উপভুক্তা
হইয়া—অর্থাৎ রাজা তাহার
সম্প্রয়োগ করিয়া ছাড়িয়া দিলে,
সে গৃহে ফিরিয়া
আইসে। এইরূপ অন্ধ্রদেশবাসীদিগের
(২)
আচার ও
ব্যবহার।
মহামাত্রগণের
ঈশ্বরের অন্তঃপুরে সুন্দরীগণ
রাত্রে রাজার সম্প্রয়োগার্থ
রাজার সহিত মিলিত হয়। এইরূপ
দক্ষিণাপথের (৩)
বাৎস ও গুল্মনামক
সোদরভ্রাতৃদ্বয়ের যে স্থানে
নিবাস, সেই
বাৎস্যগুল্মক প্রদেশে আচার
ও ব্যবহার বিদ্যমান আছে।
বিদর্ভদেশে
(বিরাটদেশে,
বড়নাগপুর)
প্রচলিত
আছে—রূপবতী জনপদসুন্দরীগণ
প্রীতিচ্ছলে একমাস বা পঞ্চদশদিন
রাজার অন্তঃপুরে যাইয়া
অন্তঃপুরিকা স্ত্রীরূপে
থাকিয়া রাজার সম্প্রয়োগ-সুখ
ভোগ করিয়া থাকে।
অপরান্তকের
(ভারতবর্ষের
পশ্চিমপ্রান্তস্থ দেশবিশেষ,
রঘু ৪।৫৮
দ্রষ্টব্য) ব্যবহার
এই যে—দর্শনীয় সুন্দরী স্বীয়
ভার্য্যাকে মহামাত্র রাজাদিগের
নিকট প্রীতিদায়রূপে সেই
দেশবাসীরা দান করিয়া থাকে।
সৌরাষ্ট্র
(সুরাট)
দেশের আচার
এইরূপ দেখিতে পাওয়া যায় যে,
তত্রত্য জনপদের
ও নগরের স্ত্রীগণ রাজার সহিত
সুরতক্রীড়ার্থ দলে দলে ও এক
এক করিয়াও রাজকূলে প্রবেশ
করিয়া থাকে।।’১৯।।
‘এ বিষয়ে দুইটি
শ্লোক আছে—
এইরূপ
ও অন্যান্যরূপ বহু বহু প্রয়োগ
পরদারকে অবলম্বন করিয়া দেশে
দেশে রাজগণকর্ত্তৃক সম্যকরূপে
প্রবর্ত্তিত আছে এবং প্রবর্ত্তিত
হইতেছে; কিন্তু
লোকহিতে রত রাজা কখনই ইহার
প্রবৃত্তি বিষয়ে উৎসাহদান
করিবেন না ও নিজেও প্রয়োগ
করিবেন না; কারণ,
ষড়্বিধ অরিবর্গের
নিগ্রহ করিতে পারিলেই,
তবে রাজা পৃথিবীজয়
করিতে সক্ষম হইবেন।।’২০।।
—————————
ইতি দূতীকর্মনামক
প্রকরণ।
ইতি
শ্রীমদ্বাৎস্যায়নীয় কামসূত্রে
পারদারিকনামক
পঞ্চম
অধিকরণে ঈশ্বরকামিতা নামক
পঞ্চম
অধ্যায় সমাপ্ত।।৫।।
—————————-
(১)
নগরাদি লক্ষণ
কামসূত্রের ১।৪।২ শ্লোকে
দ্রষ্টব্য।
(২)
চীন পরিব্রাজক
হিয়াংসিয়াং বলিয়াছেন যে,
এখনকার তেলিঙ্গানা-ই
সেকালের অন্ধ্ররাজ্য।
অন্ধ্রনৃপতিরা বৌদ্ধ ছিলেন।
ইহাদের সময়ে নাগার্জ্জুন
প্রাদুর্ভূত হইয়াছিলেন। ইহা
বোধহয় ২০০০ বৎসরের কথা।
(৩)
দক্ষিণাপথ—এই
পথ বিন্ধ্যপর্বত ও সমুদ্রপামী
পয়োষ্ণী নদী এবং বিদর্ভদিগের
পথ, ইহা
কোশলদিকে গিয়াছে। ইহার পর
দক্ষিণদিকে যে দেশ, তাহার
নাম দক্ষিণাপথ। (কৃত্যকল্পদ্রুমীর
ধর্মকাণ্ডের ২১৫ পৃষ্ঠা
দ্রষ্টব্য।)